নিউজ ডেস্ক,
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবায় রাবেয়া ইসলাম রাবু (৩৩) হত্যা মামলার তিন আসামীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। শনিবার (৬ জুলাই) সকালে জেলার কসবা উপজেলার বায়েক ইউনিয়ন ও শুক্রবার সকালে ঢাকার ধানমন্ডি এলাকায় পৃথক অভিযান পরিচালনা করে তাদেরকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন, জেলার কসবা উপজেলার বায়েক ইউনিয়নের কাশিরামপুর গ্রামের মৃত সোনা মিয়ার ছেলে সামসুল ইসলাম প্রকাশ মিন্টু-(৪৮), একই ইউনিয়নের রঘুরামপুর দক্ষিণপাড়ার মৃত সিরাজ মিয়ার ছেলে মোঃ আবদুল আলীম-(৪২) ও একই গ্রামের মৃত সামসু মিয়ার ছেলে মোঃ কুডু মিয়া-(৩৮)।
শনিবার বিকেলে গ্রেপ্তারকৃতদেরকে আদালতে সোপর্দ করা হলে তারা ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।
নিহত রাবেয়া ইসলাম রাবু জেলার নবীনগর উপজেলার রসুল্লাবাদ গ্রামের মৃত আলী আজম সরকারের মেয়ে। মাদক ব্যবসার জেরে তাকে হত্যা করা হয়।
রোববার সকালে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে পুলিশ।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম) সোনাহর আলী জানান, গত ২ জুলাই কসবা উপজেলার বায়েক ইউনিয়নের কাশিরামপুর গ্রামের পাহাড়ের ঢালে বাঁশ ঝাড়ের ভিতর থেকে মাথাবিহীন অবস্থায় অর্ধগলিত এক মহিলার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। লাশটির হাত ও পায়ের তালুতে চামড়া না থাকায় ফিঙ্গারপ্রিন্ট সংগ্রহ করা সম্ভব হয়নি। দৈহিক গড়ন পর্যালোচনা করে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হয়, এই নারীকে ৫/৭ দিন আগে হত্যা করা হয়েছে। পরবর্তীতে ঘটনাস্থল তল্লাশী করে কিছু আলামত পাওয়া যায় এবং তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় নিহত নারীর নাম-পরিচয় পাওয়া যায়। তার পরিবারের লোকজনকে সংবাদ দিলে তারা এসে লাশ সনাক্ত। এই ঘটনায় রাবুর ভাই অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। পরে তদন্ত শুরু করে পুলিশ।
তিনি জানান, পুলিশ তদন্তে বায়েকের চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী সামসুল ইসলাম প্রকাশ মিন্টুকে ঢাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে তার দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে কসবা থেকে আবদুল আলীম ও মোঃ কুডু মিয়াকে গ্রেপ্তার করা হয়। গত শনিবার বিকেলে তারা সবাই আদালতে হত্যার দায় স্বীকার করে ১৬৪ ধারা জবানবন্দি দেয়।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম) সোনাহর আলী আরো জানান, পুলিশের কাছে তিন আসামি জানান, তারা তিনজনই মাদক ব্যবসায়ী। নিহত রাবেয়া ইসলাম রাবু মাদক পরিবহন করে বিভিন্ন জায়গায় নিয়ে যেতেন। বেশ কিছুদিন আগে রাবু তাদের কাছ থেকে ১২ কেজি গাঁজা নিয়ে যান সরবরাহ করতে। কিন্তু সেই গাঁজার টাকা আর ফেরত দেয়নি রাবু। এনিয়ে তাদের মধ্যে মনমালিন্য চলে আসছিল। এরই জেরে রাবুকে হত্যার পরিকল্পনা করে তারা। গত ২৫ জুলাই রাবু কসবায় আবারো মাদক নিতে আসলে সামসুল ইসলাম প্রকাশ মিন্টু, আবদুল আলীম ও মোঃ কুডু মিয়া তাকে ধরে বায়েকের সীমান্তবর্তী একটি পাহাড়ে তাকে নিয়ে যায়। সেখানে রাবুকে দা দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করে বাঁশের ঝোপঝাড়ে ফেলে চলে যায়। নীরব এলাকা হওয়ায় লাশটি কারো নজরে পড়েনি। ১ সপ্তাহ পর স্থানীয়রা ঝোপঝাড়ে লাশটি পড়ে থাকতে দেখে পুলিশকে খবর দিলে পুলিশ গিয়ে লাশটি উদ্ধার করে।