নিউজ ডেস্ক,
খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার বলেছেন, কেউ যাতে অতিরিক্ত মজুদ করে সরকারকে বেকায়দায় ফেলতে না পারে সেজন্য মজুদদারের বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ শাস্তি যাবজ্জীবন কারাদন্ডের বিধান রেখে নতুন আইন হচ্ছে। তিনি বৃহস্পতিবার (২০ জুন) দুপুরে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ সাইলোর বিএমআরই (সংস্কার কাজ) শেষে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে একথা বলেন।
এসময় খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার আরো বলেন, আশুগঞ্জ খাদ্য মন্ত্রনালয়ের একটি গুরুত্বপূর্ন জায়গা। আশুগঞ্জের এই সাইলো নতুন করে গড়তে খরচ হতো ৭০০/ ৮০০ কোটি টাকা। তবে এটি শুধু আধুনিকায়নে খরচ হয়েছে ৪৫ কোটি টাকা। এতে ১০০ বছরেও এই সাইলোর কিছু হবেনা।
তিনি আরো বলেন, সাইলোর মতো খাদ্য ভান্ডার ছিলো বলেই, সেগুলো সঠিকভাবে চালানো গিয়েছে বলেই, করোনা এবং রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের মত বড় সমস্যা অতিক্রম করতে পেরেছি। বড় বড় সংস্থাগুলো বলেছিলো দেশে দুর্ভিক্ষ হবে। আর সেই তালিকায় বাংলাদেশের নামও ছিলো। কিন্তু আমরা জনগণকে বুঝতে দেই নাই। আমরা জানি পেট ঠান্ডা থাকলে মাথা ঠান্ডা থাকবে। আর সেই পেট ঠান্ডা রাখার ব্যবস্থাটা করে রাখা হয়েছিলো।
খাদ্যমন্ত্রী বলেন, এক সময় বাংলাদেশে যখন ৭ কোটি মানুষ ছিলো তখন অনেকেই বাঁসি ভাত খেয়ে জীবন পার করেছে। গন্ধযুক্ত আটার রুটি খেয়েছে। কিন্তু এখন ধনীরা রুটি খায়, আর গরীবেরা তিন বেলা ভাত খায়। ধনীরা রুটি খায় ডায়াবেটিসের ভয়ে, আর গরীবেরা ভাত খায় শক্তির জন্য। তবে দুঃখের বিষয় সেই চাউলের পুষ্টি রাখা হচ্ছেনা। চাউলকে পলিস করে করে পুষ্টি নষ্ট করে দেয়া হচ্ছে। সেখানে থেকেও আমাদেরকে ফিরে আসতে হবে।
মন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশে এখন খাদ্যের কোনো কমতি নেই। তবে খাদ্যের পুষ্টির সমস্যা আচে। নিরাপদ খাদ্য পেতে সমস্যা হচ্ছে। তাই খাদ্যে যেনো কেউ ভেজাল না দেয় সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। কৃষক বাঁচলে দেশ বাঁচবে প্রধানমন্ত্রী সেদিকেই এগুচ্ছেন এবং সেই নির্দেশনা দিচ্ছেন। তাই আমাদের নিজ নিজ জায়গা থেকে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। তাহলে আমরা এই বাংলাদেশকে ২০৪১ সাল নয়, ২০৩১ সালের মধ্যেই সোনার বাংলা হিসেবে গড়ে তুলতে পারবো।
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হাবিবুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন স্থানীয় সংসদ সদস্য মোঃ মঈন উদ্দিন মঈন, খাদ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব মোঃ ইসমাইল হোসেন এনডিসি, খাদ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মোঃ শাখাওয়াত হোসেন, অতিরিক্ত মহা পরিচালক আবদুল্লাহ আল- মামুন, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার পুলিশ সুপার মোহাম্মদ শাখাওয়াত হোসেন, আশুগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ জিয়াউল করিম খান সাজু ও আশুগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার শ্যামল চন্দ্র বসাক। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন সাইলোর অধিক্ষক সিরাজুস সালেকিন।
উল্লেখ্য, প্রায় ৪৭ কোটি টাকা ব্যায়ে দেশের অন্যতম গম সংরক্ষণের জন্য ৫০ হাজার মেট্টিক টন ধারণ ক্ষমতার আশুগঞ্জ সাইলোর বিএমআরই (সংস্কার কাজ) করা হয়।