স্টাফ রিপোর্টার:
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল-অরুয়াইল সড়কের সংস্কারের দাবিতে ফুঁসে উঠেছেন সেখানকার মানুষ। গুরুত্বপূর্ন এই সড়কটির দ্রুত সংস্কারের দাবিতে বৃহস্পতিবার মানববন্ধন করেছে এলাকাবাসী। বৃহস্পতিবার সকালে স্থানীয় অটোরিকশা ষ্ট্যান্ডে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়ার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন উপজেলা নাগরিক সমাজের সভাপতি সানা উল্লাহ ভূঁইয়া, ইউপি সদস্য রেজাউল, এম.মনসুর আলী, সুলভ আহমেদ, বাশার আহমেদ ও নূরুল আমীন প্রমুখ।
মানববন্ধনে বক্তারা অভিযোগ করে বলেন, সড়কটির সংস্কারের জন্য সরকার সাড়ে ৭ কোটি টাকা বরাদ্ধ করেছে। এক বছরের মধ্যে সড়কের সংস্কার কাজ শেষ করার কথা থাকলে গত ১৯ মাসে সংস্কার কাজ শেষ হয়নি। ঠিকাদার খুবই শ্লথ গতিতে সড়কের সংস্কার কাজ করছেন।
তারা অভিযোগ করে বলেন, সড়কটির সংস্কার কাজ শেষ না হওয়ায় বাড়ছে জনদুর্ভোগ। সামান্য বৃষ্টি হলেই এই সড়ক দিয়ে চলাচল করা যায়না। তারা বলেন, নিম্নমানের নির্মান সামগ্রী দিয়ে গুরুত্বপূর্ন এই সড়কের সংস্কার কাজ করা হচ্ছে। উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানানো হলেও তারা নির্বিকার।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, নির্ধারিত সময়ের তিন মাস পর সড়কটির সংস্কার কাজ শুরু করেন ঠিকাদার। সংস্কার কাজে কোন গতি নেই। নিম্নমানের নির্মান সামগ্রী দিয়ে সড়কের সংস্কার কাজ করা হচ্ছে।
বক্তারা বলেন, সড়কটির বেহাল দশার কারনে উপজেলার তিন ইউনিয়নের লোকজনের স্বাভাবিক চলাফেরায় বিঘœ ঘটছে। শিক্ষার্থীরা খুবই কস্ট করে এই রাস্তা দিয়ে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আসা যাওয়া করে। বক্তারা দ্রুত সড়কটির সংস্কার শুরু করার দাবি জানিয়ে বলেন, অন্যথায় কঠিন কর্মসূচি দেয়া হবে।
সরাইল উপজেলা প্রকৌশলীর কার্যালয় ও স্থানীয় লোকজন সূত্রে জানা গেছে, ২০১০ সালে উপজেলার ভাটি এলাকার মানুষের যোগাযোগ সুবিধার জন্য হাওরের উপর দিয়ে সড়কটি নির্মিত হয়। এটি এলাকাবাসীর স্বপ্নের সড়ক। সড়কটি নির্মানের ফলে উপজেলার ভাটি এলাকার তিন ইউনিয়নবাসীর স্বপ্ন পূরণ হয়। সড়কটি নির্মিত হওয়ার ২/৩ বছরের মধ্যেই হাওরের পানির তোড়ে সড়কটি ভেঙ্গে যায়। সে সময়ে সংস্কারের নামে ৩৫/৪০ লাখ টাকা লুটপাট করে ঠিকাদার ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। অল্প সময়েই বিলীন হয়ে যায় সংস্কার কাজ। আবার বাড়তে থাকে জন দূর্ভোগ। কলেজ ও স্কুলের সহ¯্রাধিক শিক্ষার্থীর যাতায়তে দেখা দেয় প্রতিবন্ধকতা। ২০১৫ ও ২০১৬ সালের পানিতে সড়কটি ভেঙ্গে একেবারে বিলীন হওয়ার শঙ্কা দেখা দেয়। তৎকালীন সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট জিয়াউল হক মৃধার অক্লান্ত পরিশ্রমে ২০১৮ সালে সড়কটির ভূঁইশ্বর থেকে অরুয়াইল তিতাস ব্রীজ পর্যন্ত ২.৯৪৭ কিলোমিটার জায়গার সংস্কারের জন্য ৭ কোটি ৮৩ লাখ টাকা বরাদ্ধ হয়।
ভালমানের নির্মাণ সামগ্রী, মানসম্মত ব্লক দিয়ে, মাটি ফেলে আরো উচুঁ করে সড়কটির সংস্কার করার কথা। ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান মেসার্স হাসান এন্টার প্রাইজ নামের প্রতিষ্ঠান সংস্কারের কাজটি পায়। কার্যাদেশ অনুযায়ী কাজ শুরু হওয়ার কথা ছিল ২০১৮ সালের ১৩ এপ্রিল থেকে। কিন্তু ঠিকাদার কাজটি শুরু করেন ৩ মাস পর একই বছরের ১২ ডিসেম্বর। এরপরও কাজে ছিল ধীরগতি। এখনো চলছে এভাবেই। ২০১৯ সালের ১৩ এপ্রিল কাজটি শেষ হওয়ার কথা থাকলেও এখনো সংস্কার কাজ শেষ হয়নি।
উপজেলা সহকারি প্রকৌশলী ও সংস্কার কাজের তদারকি কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল বাকী বলেন, কাজ বন্ধ নেই। নীচের কাজ শেষ। ফাঁকে ফাঁকে কিছু ব্লক বসাতে হবে। মাটি বসার সুযোগও তো দিতে হবে। ব্লকের স্বল্পতা ছিল। বুধবার সকাল থেকে ব্লক বসানো শুরু হয়েছে। এরপরই কার্পেন্টিং এর কাজ শুরু হবে।