Advertisement

পূর্বমেড্ডা ব্যক্তি মালিকানাধীন জায়গায় নির্মাণকাজে বিজিবির বাঁধা!

NewsBrahmanbaria

এই আর্টিকেল টি ১০৭৩।

এনবি প্রতিনিধি
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) সদস্যদের বাঁধার মুখে পৌর এলাকার পূর্বমেড্ডার তিতাসপাড়ায় একটি জায়গার সীমানা প্রাচীর নির্মাণ করতে পারেননি জায়গার মালিক মলাই মিয়া। এ সময় বিজিবির সদস্যরা জায়গার মালিকের সাথে অশোভন আচরণ ও তাকে হুমকি প্রদান করেন। বিজিবির দাবি, জায়গাটি সরকারের।

শুক্রবার বিকেল সাড়ে তিনটায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেসক্লাবে আয়োজিত এক সাংবাদ সম্মেলনে জায়গার মালিক মলাই মিয়া এই অভিযোগ করেন। লিখিত বক্তব্যে মলাই মিয়া বলেন, ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদরের মেরুড়া (প্রচলিত নাম মেড্ডা) মৌজার সি এস ১৩৫৩ দাগ, আর এস ১৭৭৪ দাগের অন্তর্গত বি এস ৫৪৩৯ দাগে ২২ শতক জায়গা তিনি ক্রয় সূত্রে মালিক। ১৯৯৪ সালে তিনি জায়গাটি ক্রয় করেন। গত ২৫ বছর ধরে তিনি জায়গা ভোগ দখল করে আসছেন। জায়গাটি ক্রয় করার পর জায়গার পশ্চিম ও পূর্ব পাশে ৫ ফুট উচ্চতার সীমানা প্রাচীর দেন তিনি। ২০১৬ সালে তিনি ২২ শতক জায়গা থেকে চার শতক জায়গা ছুট্টু মিয়া নামক এক ব্যক্তির কাছে বিক্রি করে দেন। ছুট্টু মিয়া সেখানে ইট বালুর ব্যবসা করে।

জায়গার মালিক মলাই মিয়া অভিযোগ করে বলেন, তার জায়গা থেকে দক্ষিণ দিকে প্রায় ৫০০ গজ দূরে বিজিবির একটি নৌ-ক্যাম্প আছে। ২০১৭ সালের জুলাই মাসের মাঝামাঝি সময়ে তিনি জায়গার দক্ষিণদিকে সীমানা প্রাচীর নির্মাণ করতে গেলে বিজিবির সদস্যরা তাঁকে বাঁধা দেন ও বিজিবির সদস্যরা জায়গার মালিকানাও দাবি করেন।
পরে ওই বছরের ২৫ জুলাই মলাই মিয়া জায়গার মালিকানা ঘোষণাপত্র চেয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া যুগ্ম জেলা জজ ১ম আদালতে পৃথকভাবে মামলা দায়ের করেন। মামলায় বিজিবির মহাপরিচালকের পক্ষে সরাইল ২৫ বিজিবির পরিচালককে বিবাদী করা হয়। মামলার আরজিতে আদালতের কাছ থেকে ওই জায়গাতে তাদের স্বত্ব ঘোষণা ও বিজিবির দখলে বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞার আদেশ জারির আবেদন করা হয়।

২০১৭ সালের ৫ নভেম্বর যুগ্ম জেলা জজ ১ম আদালতের হাকিম তাদের আবেদন মঞ্জুর করেন। আদালত দখলে বাধা এবং তাদেরকে বেদখল প্রসঙ্গে বিজিবির বিরুদ্ধে অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা জারি করেন।
মলাই মিয়া বলেন, বিজিবিপক্ষ পরবর্তীতে অস্থায়ী আদেশের বিরুদ্ধে জেলা জজ আদালতে সিভিল রিভিশন মামলা করেন। ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা জজ মোহাম্মদ সফিউল আজম বিজিবির আবেদন নামঞ্জুর করেন এবং যুগ্ম জেলা জজ ১ম আদালতের আদেশ বহাল ও বলবৎ রাখেন।

তিনি অভিযোগ করে বলেন, আদালতের নিষেধাজ্ঞা থাকলেও বিজিবি আমাদের শান্ত দখলে বাধা সৃষ্টি করছে। তিতাস নদীর বেড়িবাঁধের কারণে আমাদের সীমানা প্রাচীর ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে। কিন্তু বিজিবি সদস্যরা তা পুনঃনির্মাণ করতে বিভিন্নভাবে বাধা দিচ্ছেন। তিনি বলেন, চলতি বছরের গত ৯ মে ছুট্টু মিয়া (জায়গার ৪ শতকের মালিক) ও আমি (মলাই মিয়া) ব্রাহ্মণবাড়িয়ার যুগ্ম জেলা জজ ১ম আদালত ওই জায়গায় নির্মাণকাজ ও ওই জায়গায় থাকা ইট বিক্রির অনুমতি চয়ে একটি আবেদন করি। আদালত আবেদন মঞ্জুর করেন। যুগ্ম জেলা জজ ১ম আদালতের হাকিম কাজী সহিদুল ইসলাম গত ৯ মে ও ১২ মে শুনানীতে শেষে আমাদের পক্ষে আদেশ দেন।

সংবাদ সম্মেলনে ছুট্টু মিয়া বলেন, জায়গায় আমাদের স্বত্ব ও দখল আছে মর্মে জেলা জজ ও যুগ্ম জেলা জজ ১ম আদালতের সিদ্ধান্তে পৌঁছেছেন। তিনি অভিযোগ করে বলেন, বিজিবি তাকে বিভিন্নভাবে ক্ষতিগ্রস্থ করার হুমকি দিচ্ছেন।
গত ১২ মে যুগ্ম জেলা জজ ১ম আদালতের আদেশ সূত্রে জানা গেছে, ওই জায়গায় বিজিবির স্বত্ব দখল আছে বিজিবি তা প্রমাণ কাতে ব্যর্থ হয়েছেন। বিজিবি জায়গাটি সরকারের খাস জমি হিসেবে দাবি করলেও উক্ত দাবি সমর্থনে কোনো দলিল বা খতিয়ান আদালতে উপস্থাপন করেননি। বিজিবি কর্তৃপক্ষ নালিশা জমি জেলা প্রশাসক ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কাছ থেকে অনুমতি সূত্রে প্রাপ্ত হয়েছেন মর্মেও কোনো অনুমতিপত্র আদালতে দাখিল করেননি। ওই জায়গা সরকারি জমি হিসেবে প্রকাশিত হয়েছে মর্মেও কোনো কাগজপত্রও আদালতে দাখিল করতে পারেননি বিজিবি কর্তৃপক্ষ। আদালত তাদেরকে ওই জায়গায় মজুদ থাকা ইট বিক্রির এবং নিজেদের ঝুঁকিতে নির্মাণকাজের অনুমিত দেন।

এদিকে  শুক্রবার ওই জায়গায় নির্মাণকাজ করতে গেলে মলাই মিয়া ও ছুট্টু মিয়াকে বাধা দেন বিজিবির সদস্যরা। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যান জেলার গণমাধ্যমকর্মীরা। এসময় বিজিবি সদস্যরা গণমাধ্যমকর্মীদের কাজ করতে বাধা দেন। এক পর্যায়ে গণমাধ্যমকর্মীদের সাথে ঔদ্ধত্যপূর্ন ও অশোভন আচরন করেন বিজিবি সদস্যরা।

বিজিবির দলের দায়িত্বে থাকা এক কর্মকর্তা জানান, বিষয়টি নিয়ে আদালতে আপিল করেছে বিজিবি। আপিলের কাগজ দেখতে চাইলে তিনি বলেন, বিজিবি আপিল করেছে। আগামী রোববার- সোমবার পর্যন্ত অপেক্ষা করতে বলেন। তাঁর নাম জানতে চাইলে বিজিবির সদস্যরা চড়াও হন এবং সাংবাদিকদের দিকে তেড়ে আসেন।

কারো নাম জানতে চাওয়া কি আইনমত দন্ডনীয় অপরাধ কি না জানতে চাইলে সরাইল ২৫ বিজিবির অধিনায়ক লেঃ কর্নেল গোলাম কবির বলেন, বাংলাদেশের নিয়ম কানুন ও সংবিধান দেখতে হবে। তারপর আপনাকে বলতে হবে। আমি আইনের ছাত্র না আর আইনের ব্যাপারে আমার কোনো অভিজ্ঞতাও নেই।

Advertisement

Sorry, no post hare.

Social Media Auto Publish Powered By : XYZScripts.com