স্টাফ রিপোর্টার
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় আদালতের ভুয়া নিয়োগপত্র দিয়ে টাকা নেয়ার সময় আবু বক্কর শাহীন-(২৭) নামে এক যুবককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গত রোববার বিকেলে ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেসক্লাব থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারকৃত আবু বক্কর শাহীন জেলার কসবা উপজেলার গোপীনাথপুর ইউনিয়নের মরহুম আবুল কালামের ছেলে। এ ঘটনায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। সোমবার সকালে পুলিশ তাকে আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মুন্সিগঞ্জ চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে চাকরি দেয়ার জন্য ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার বিজয়নগর উপজেলার ইছাপুরা ইউনিয়নের খাদুরাইল গ্রামের আনছর আলীর ছেলে ফরহাদুল আমিন মামুনের সাথে তিন লাখ টাকার চুক্তি করেন শাহীন। চুক্তি অনুযায়ী মামুনের কাছ থেকে কয়েক ধাপে ১৮ হাজার টাকা নেন শাহীন। রোববার আরও এক লাখ টাকা নেয়ার কথা ছিল।
প্রতারণার শিকার ফরহাদুল আমিন মামুন জানান, তিনি প্রবেশপত্র-নিয়োগপত্র সবই পেয়েছেন। সেখানে নিয়োগ কমিটির চেয়ারম্যান হিসেবে মুন্সিগঞ্জের অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের স্বাক্ষর এবং সিল রয়েছে। ২৬ এপ্রিল লিখিত পরীক্ষার একটি প্রবেশপত্র দেয়া হয় মামুনকে। মামুন ওই পরীক্ষা দিতে ঢাকায় গেলে তাকে পরীক্ষা দিতে হবে না এবং তার চাকরি হয়ে গেছে বলে জানান শাহিন।
গত ২ মে মামুনকে নিয়োগপত্র দেন শাহীন। ৯ মে চাকরিতে যোগদান করার কথা ছিল তার।
রোববার বিকেলে ১ লাখ টাকা নিতে ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের সুপার মার্কেট এলাকায় আসেন শাহীন। তবে মামুন তার এক বড় ভাইয়ের সামনে টাকা দেবেন বলে শাহীনকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেসক্লাবে নিয়ে যায়। মামুনকে দেয়া নিয়োগপত্রটি দেখে ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক দীপক চৌধুরী বাপ্পীর সন্দেহ হলে তিনি তাৎক্ষণিক বিষয়টি আইনমন্ত্রী অ্যাডভোকেট আনিসুল হক এবং আইনমন্ত্রীর সাবেক একান্ত সচিব রাশেদুল কায়সার ভূইয়াকে অবহিত করেন।
তারা দু’জনেই ওই প্রতারককে পুলিশে সোপর্দ করতে বলেন। পরে প্রেসক্লাব সাধারণ সম্পাদক বিষয়টি ব্রাহ্মণবাড়িয়া থানা পুলিশকে অবহিত করলে পুলিশ এসে আবু বক্কর শাহিনকে আটক করে নিয়ে যায়।
প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক দীপক চৌধুরী বাপ্পী জানান, আবু বক্কর শাহিন তার রুমে টাকা নিতে এসে ২ মে মুন্সিগঞ্জ চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট স্বাক্ষরিত একটি নিয়োগপত্র দেয় মামুনের হাতে। নিয়োগপত্রে ৯ মে যোগদানের কথা বলা হয়েছে। বিষয়টি তার সন্দেহ হলে তিনি তাৎক্ষনিক বিষয়টি আইনমন্ত্রী অ্যাডভোকেট আনিসুল হক এবং মন্ত্রীর সাবেক একান্ত সচিব কসবা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট রাশেদুল কায়সার ভূইয়া জীবনকে অবহিত করলে তারা দু’জনেই ওই প্রতারককে পুলিশে সোপর্দ করতে বলেন।
এ ব্যাপারে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ সেলিম উদ্দিনের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, এ ঘটনায় থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। গতকাল সোমবার সকালে প্রতারককে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।