স্টাফ রিপোর্টার:
সারাবিশ্বে এখন দাপিয়ে বেড়াচ্ছে করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯)। এই মহামারিতে বিশ্বনেতারা এখনো দিশেহারা। ইতিমধ্যেই পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে না ফেরার দেশে চলে গেছেন প্রভাবশালী রাজনৈতিক নেতা, মন্ত্রী, এমপি, চিকিৎসক, শিক্ষকসহ বিভিন্ন শ্রেনীপেশার মানুষ।
আমাদের দেশেও করোনার কাছে হার মেনেছেন অনেক বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ, রাজনীতিবিদ, আমলা, পুলিশ, সাংবাদিকসহ বিভিন্ন শ্রেনী পেশার মানুষ। করোনাভাইরাস থেকে সুরক্ষা পেতে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের ল্যাবরেটরীতে চলছে ভ্যাকসিন তৈরীর গবেষনা। কিন্তু এখনো ভ্যাকসিন বাজারে আসেনি। তাই করোনাভাইরাস থেকে বাঁচার একমাত্র উপায় নিজের সচেতনতা ও সরকারি স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা।
আমাদের দেশেও করোনাভাইরাস সংক্রমন দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। তবে এনিয়ে আতংকের কিছু নেই। সরকারি নির্দেশনামতো ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে চললে করোনাভাইরাস থেকে রক্ষা পাওয়া সম্ভব। এছাড়াও করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ব্যক্তি যদি চিকিৎসকের পরামর্শ মোতাবেক ব্যবস্থা গ্রহন করেন তাহলে দ্রুত করোনাভাইরাস থেকে সুস্থ্য হওয়া সম্ভব। তাই করোনাকে ভয় না পেয়ে জয় করতে হবে।
সম্প্রতি করোনাভাইরাস সংক্রমন থেকে পুরোপুরি সুস্থ্য হয়েছেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেসক্লাবের সদস্য, একুশে টিভি ও দৈনিক সময়ের আলো পত্রিকার ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা প্রতিনিধি এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়া টেলিভিশন জার্নালিস্ট এসোসিয়েশনের ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক মীর মোঃ শাহীন।
সাংবাদিক মীর মোঃ শাহীন বলেন, করোনাকে ভয় পাওয়াই রোগীর জন্য সবচেয়ে ক্ষতির কারন। করোনায় আক্রান্ত হলে হতাশ হলে চলবেনা, নিজের উপর ভরসা রাখবে হবে, আস্থা রাখতে হবে। ভয় পেলেই আস্তে আস্তে শরীর দূর্বল হয়ে যাবে।
মীর মোঃ শাহীন বলেন, মহান আল্লাহতায়ালার উপর ভরসা রাখতে হবে। আল্লাহই সকল রহমতের মালিক। তিনি বলেন, বনের বাঘে খায়না, মনের বাঘে খায়। যত বড় বিপদ আসুক না কেন মনোবল শক্ত রেখে আল্লাহর উপর আস্থা রাখতে হবে। চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী চলতে হবে।
তিনি বলেন, গত ১৬ জুন তার শরীরে জ্বর আসে। পাশাপাশি তিনি ঠান্ডা ও শরীরে ব্যাথা অনুভব করছিলেন। ২০ জুন জ্বর ও ঠান্ডা ভাল হয়ে যায়। ২২ জুন তিনি ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালে নমুনা দিলে ফলাফল করোনা পজিটিভ আসে। এরপরই তিনি চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী স্বাস্থ্যবিধি মেনে আইসোলেশনে চলে যান। পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে আলাদা রুমে বসবাস শুরু করেন।
আইসোলেশনে থাকাবস্থায় রুটিন মাফিক ৫ ওয়াক্তের নামাজ আদায়, কোরআন শরীফ তেলাওয়াত করার পাশাপাশি ঘরোয়া চিকিৎসা শুরু করেন। প্রতিদিন চারবার বিভিন্ন উপকরণ দিয়ে গরম পানির ভাপ নেন। একই সময়ে কালো জিরা দৈনিক ৪/৫ পাঁচ চিবিয়ে খাওয়া, বিভিন্ন উপকরন দিয়ে তৈরী চা খাওয়া, প্রতিদিনই ৪/৫ বার গরম পানি দিয়ে গরগরা করা শুরু করেন। পাশাপাশি খেতে থাকেন পুষ্টিকর ও ভিটামিন “সি” যুক্ত খাবার। মাঝে মাঝে ব্যায়ামও করেন।
মীর শাহীন বলেন, তিনি অসুস্থ্য হয়ে যে নিয়মগুলো পালন করেছেন করোনায় আক্রান্তরা যদি এই নিয়ম অনুসরন করেন তাহলে তাঁর মতো সবাই আল্লাহর রহমতে সুস্থ্য হয়ে উঠবেন।
নিয়ম, প্রনালীঃ-
গরম পানির ভাপঃ- তিন গ্লাস পানি ৮টি করে এলাচি, লং, দারচিনি, পরিমানমত আদা, কালোজিরা, লেবু একটা, খাটি সরিষা তেল তিন চামচ, দিয়ে পানি ফুটাতে হবে। তারপর রুমে এনে ফুটন্ত পানিতে মেনথল কয়েক রোয়া দিয়ে একটি বড় গামচা বা তোয়ালে দিয়ে মাথা ও মুখমন্ডল ঢেকে ভাপ নিতে হবে।
চা কিভাবে তৈরি করবেনঃ- মেনথল ও সরিষা তেল ছাড়া উপরের বাকী প্রনালী দিয়ে চা বানিয়ে কিছুক্ষণ পরপর খেতে হবে যেন গলায় গরম লাগে। লবন দিয়ে গরম পানির গরগরা করা। পাশাপাশি ব্যায়াম ও পুষ্টিকর খাবার খেতে হবে।
মীর শাহীন বলেন, মনোবল শক্ত করে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলায় তিনি আল্লাহর রহমতে সুস্থ্য হয়ে উঠেছেন। পরবর্তীতে নমুনা পরীক্ষায় তার করোনা নেগেটিভ আসে।
লেখকঃ- মীর মোঃ শাহীন
সাংবাদিক ও সমাজকর্মী।