স্টাফ রিপোর্টার:
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় শহরের খ্রীস্টিয়ান মেমোরিয়াল হাসপাতালে ‘ভুল চিকিৎসায়’ সহকারী শিক্ষক নওশিন আহম্মেদ দিয়া (২৯) মৃত্যুর ঘটনায় মামলার আসামীদের কঠোর শাস্থির দাবীতে প্রধানমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি দেয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার সকালে নওশিন আহমেদ এর স্কুল ক্রিসেন্ট কিন্ডার গার্টেন ও তার পরিবারের পক্ষ থেকে জেলা প্রশাসক হায়াত উদ দৌলা খানের হাতে এ স্মারকলিপি তুলে দেয়া হয়।
এসময় অন্যান্যের মাঝে দিয়ার বাবা ও মামলার বাদী শিহাব উদ্দিন গেন্দু,শ্বশুর জেলা রেডক্রিসেন্ট ইউনিটের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান এবিএম তৈমুর,ক্রিসেন্ট কিন্ডার গার্টেন এর অধ্যক্ষ মরিয়ম আক্তার,স্কুল পরিচালনা কমিটির সহসভাপতি ও আইন কলেজ অধ্যক্ষ এড.মো.হাবিব উল্লাহ,কার্যকরী সদস্য এড.সৈয়দ তানবীর হোসেন কাউসার,মামলার আইনজীবি এড.মো.মোশারফ হোসেন ও স্কুলের শিক্ষি/শিক্ষিকা ও অভিভাবকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। স্মারকলিপিতে ক্রিসেন্ট কিন্ডার গার্টেন ও সূর্যমুখী কিন্ডার গার্টেন এর শিক্ষক/শিক্ষিকা সহ বিপুল সংখ্যক অভিভাবকের স্বাক্ষর রয়েছে।
এরপর জেলার পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আনিসুর রহমান ও সিভিল সার্জন বরাবরও স্মারকলিপি প্রদান করা হয়। এর আগে গত মঙ্গলবার ও সোমবার একই দাবীতে শহরের প্রেসক্লাব চত্বরে বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষ,বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন,এলাকাবাসী ও ক্রিসেন্ট কিন্ডার গার্টেন স্কুলের পক্ষ থেকে মানববন্ধন ও মিছিল অনুষ্ঠিত হয়েছে।
জানা যায়,ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌর এলাকার মুন্সেফপাড়া ক্রিসেন্ট কিন্ডার গার্টেন স্কুলের সহকারী শিক্ষিকা নওশীন আহাম্মদ দিয়া গর্ভবতী অবস্থায় গত ৩০ অক্টোবর খ্রীষ্টিয়ান মেমোরিয়াল হাসপাতালে ভর্তি হন। আগাম অপারেশনের মাধ্যমে ডেলিভারীর করা হয়। সুস্থ হওয়ার আগেই তাকে রিলিজ দিয়ে দেয়া হয়। ৪ নভেম্বর পুনরায় দিয়ার শরীর খারাপ হলে তাকে আবার ওই হাসপাতালে নেয়া হয়। হাসপাতালের পরিচালক ডাক্তার ডিউক চৌধুরী, অরুনেশ্বর পাল অভি ও মোঃ শাহাদাত হোসেন রাসেল মৃত্যু হতে পারে জেনেও দিয়ার ভুল চিকিৎসা এবং ভুল ইনজেকশন ও ঔষধ প্রয়োগ করেন। দিয়া অজ্ঞান হয়ে পড়লে তার মুখে অক্সিজেন দিয়ে দুপুরে ঢাকায় নিয়ে যেতে বলে।
বিকেল সাড়ে ৪টায় ঢাকা ল্যাব এইড হাসপাতালে পৌছলে সেখানকার চিকিৎসকরা জানান, কয়েক ঘন্টা পূর্বেই তার মৃত্য হয়েছে। মৃত দিয়ার বাবা শিহাব আহমেদ গেন্দু মিয়া গত ১৩ নভেম্বর ব্রাহ্মণবাড়িয়ার অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলাটি দায়ের করেন।
আসামিরা হলেন খ্রীস্টিয়ান মেমোরিয়াল হাসপাতালের স্বত্ত্বাধিকারী ডা. ডিউক চৌধুরী ও তার ক্লিনিকের দুই চিকিৎসক অরুনেশ্বর পাল এবং মো. শাহাদাৎ হোসেন রাসেল। এরপর আদালতের আদেশে জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট তনিমা আফ্রাদের উপস্থিতিতে গত ১৫ নভেম্বর দিয়ার লাশ শেরপুর কবরস্থান থেকে উত্তোলন করে ময়নাতদন্ত সম্পন্ন করা হয়।
ছবি যুক্ত।