Advertisement

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় গুটিদাড়া প্রতিযোগীতা অনুষ্ঠিত

NewsBrahmanbaria

এই আর্টিকেল টি ২০।

নিউজ ডেস্ক,

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় বিশিষ্ট রাজনীতিবিদ, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব, ক্রীড়া সংগঠক ও সাবেক প্রতিমন্ত্রী ডাঃ ফরিদুল হুদা স্মরনে গ্রামীণ ঐতিহ্যের খেলা গুটি দাড়া খেলা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সোমবার (১৩ জানুয়ারি) বিকালে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সাহিত্য একাডেমির আয়োজনে শহরতলীর শেরপুর এলাকায় এ খেলা অনুষ্ঠিত হয়।

প্রতিযোগীতার পুরষ্কার বিতরনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন সাবেক প্রতিমন্ত্রী ডাঃ ফরিদুল হুদার ছেলে ডাঃ নাজমুল হুদা বিপ্লব।

সাহিত্য একাডেমির সভাপতি কবি জয়দুল হোসেনের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক নুরুল আমিনের সঞ্চালনায় এতে বিশেষ অতিথি ছিলেন, ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেস ক্লাবের সভাপতি জাবেদ রহিম বিজন, সাধারন সম্পাদক মোঃ বাহারুল ইসলাম মোল্লা, টেলিভিশন জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশনে সভাপতি আল-আমীন শাহীন, সাধারন সম্পাদক মফিজুর রহমান লিমন। প্রতিযোগীতায় লাল ও সবুজ নামে দুটি দল অংশগ্রহণ করে। প্রত্যেক দলে ১৩জন করে খেলোয়াড় অংশ নেয়।

খেলার নিয়মানুযায়ী মহিষের শিং দিয়ে তৈরী বিশেষ গোলাকৃতির গুটিতে প্রায় দেড় হাত লম্বা বাঁশের দাড়া দিয়ে আঘাত করে নির্দিষ্ট সীমানার বাইরে পাঠাতে হয়। বিপরীত দিকে অবস্থান করা ১৩জন খেলোয়াড়ের মধ্যে কেউ যদি প্রতিপক্ষের মারা বল লুফে নেয় তাহলে প্রতিপক্ষের সদস্য আউট হন। অন্যথায় পাল্টা ব্যাক থ্রোতে পয়েন্ট যুক্ত হিসেবে গন্য হয়। এভাবে প্রথমে গুটিতে আঘাত করতে নেমে নির্ধারিত ৩০ মিনিটের মধ্যে লাল দলের ১৩জন খেলোয়ার ৭ পয়েন্ট অর্জন করেন। জবাবে সবুজ দলের খেলোয়াড়েরাও নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ৭ পয়েন্ট অর্জন করে। ফলে খেলাটি ড্র-হয়।

আয়োজকদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, খেলায় ব্যবহৃত গুটিটি প্রায় ৫০ বছর আগের। মহিষের শিং দিয়ে বিশেষভাবে এটি বানানো। খেলার পর কারো কাছে এটি যতœ সহকারে রেখে দেয়া হয়। কেননা, এখন আর মহিষের শিংয়ের এই গুটি পাওয়া যায় না। এখন যেগুলো পাওয়া যায়, সেগুলো অন্য কোনো উপাদান দিয়ে মেশিনে তৈরি। মূলত জমিতে যখন ফসল থাকে না তখনই এ খেলার আয়োজন করা হয়।

মোঃ ফারুক মিয়া নামে এক প্রবীণ খেলোয়াড় বলেন, ‘৩০ বছরেরও বেশি সময় ধরে তিনি খেলাটি খেলছেন। বেশ কয়েক বছর ধরে শেরপুর গ্রামে এ নিয়ে প্রতিযোগিতা হয়। এছাড়া তারা নিজেদের মধ্যেই খেলাটি খেলে থাকেন।

মোঃ জসিম নামে আরেক খেলোয়াড় বলেন, ‘আমার বাবা এ খেলাটি খেলতো। এখন আমি ও আমার ভাই খেলে থাকি। এ খেলায় আমরা আনন্দ পাই। তরুণরা যেন এ ঐতিহ্যবাহী খেলায় এগিয়ে আসে তাদের প্রতি সে আহবান রইলো।
খেলা দেখতে আসা ছেনু মিয়া বলেন, আমরা আনন্দ পাই বলে খেলাটা দেখতে আসি। এটা ভিন্নধর্মী খেলা।

শহিদ মিয়া নামে আরেকজন বলেন, খেলাটি গ্রামীন ঐতিহ্য। আমাদের এলাকায় নিয়মিতই এ খেলা হয়ে থাকে। অনেকে দূর-দুরান্ত থেকে দেখতে আসেন।

খেলা দেখতে আসা নারী দর্শক খাদিজা আক্তার বলেন, আমি আজকে এই খেলা দেখেছি। তার আগে আমার বাবা-চাচারা এই খেলা খেলেছিল। এখন আমরা দেখতে আসছি এই খেলা। খেলা দেখে আমাদের অনেক ভাল লেগেছে। আমরা চাই, এমন খেলা যেন বন্ধ না হয়।

অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি ডাঃ নাজমুল হুদা বিপ্লব জানান, এটি ঐতিহ্যবাহী একটি খেলা। এই খেলাকে ধরে রাখার জন্যে আমার পিতা ডাঃ ফরিদুল হুদা চেষ্টা করে গেছেন। আমিও সেই চেষ্টা অব্যাহত রাখার সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি। আশা করি ভবিষ্যতে সেটি আরো প্রসার ঘটবে।

খেলার আয়োজক সাহিত্য একাডেমীর সভাপতি কবি জয়দুল হোসেন বলেন, বাঙালির হারিয়ে যাওয়া এই খেলাটি সরকারিভাবে পৃষ্টপোষকতার মধ্যে দিয়ে গ্রাম ছড়িয়ে দেয়া হয় তাহলে এই খেলাকে বাঁচিয়ে রাখা সম্ভব হবে। পাশাপাশি ব্যতিক্রমী এই ঐতিহ্যবাহী খেলাটিকে ধরে রাখার জন্যে আগামীদিনে আরো বড় আকারে টুর্নামেন্টের আয়োজন করা হবে। এতে বিভিন্ন বয়সী খেলোয়াররা অংশগ্রহন করতে পারবে।

 

Advertisement

Sorry, no post hare.

Social Media Auto Publish Powered By : XYZScripts.com