নিউজ ডেস্ক,
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়ার বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে। গত ২৪ ঘন্টার ব্যবধানে শুক্রবার দুপুর নাগাদ দেড় থেকে দুই ফুট পানি কমে গেছে। এই অবস্থায় অনেক পরিবারই আশ্রয় কেন্দ্র থেকে বাড়ি ফিরতে শুরু করেছেন। আগামী দুই-একদিনের মধ্যে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার আশা করা হচ্ছে।
প্রশাসনের পাশাপাশি বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনের পক্ষ থেকেও ক্ষতিগ্রস্তদের মধ্যে সহায়তা দেয়া হচ্ছে।
এদিকে পানি কমলেও স্রোতের তোড়ে আখাউড়া-কসবা সড়কের দেবগ্রাম ও নয়াদিল এলাকাকে ভাগ করা একটি ছোট্ট সেতুর একপাশ ধ্বসে যায়। এতে করে বৃহস্পতিবার রাত থেকে আখাউড়া উপজেলার সাথে কসবা উপজেলার সড়ক যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায়। এছাড়া পৌর এলাকার দেবগ্রামে নতুন নির্মাণ হওয়া আরেকটি সেতুর এপ্রোস সড়কের পাশ থেকে মাটি সরে গেছে। দ্রুত পানি না কমলে এটিও ঝুঁকির মধ্যে পড়ে যাবে। দু’টি সেতুর কাছে বৈদ্যুতিক খুঁটি থাকায় ওই এলাকাসহ আশেপাশে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রাখা হয়েছে।
এদিকে আখাউড়া স্থলবন্দর এলাকার কাস্টমস ও ইমিগ্রেশনে গিয়ে দেখা গেছে সেখানেও পানি একেবারেই কমে গেছে। ইমিগ্রেশন কর্মকর্তা মোঃ দেলোয়ার হোসেন জানান, কম্পিউটারসহ ইলেকট্রনিক ডিভাইস ঠিকঠাক থাকলে কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনা করে দু’একদিনের মধ্যে কার্যক্রম শুরু করা যাবে।
উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, ভারতীয় পাহাড়ি ঢলের পানির তোড়ে উপজেলার উপজেলার ৪৭টি গ্রাম প্লাবিত হয়। এতে করে ওইসব গ্রামের ১৬৯৭টি পরিবার পানিবন্দি হয়। পানির তোড়ে ভেঙ্গে যায় উপজেলার গাজির বাজার এলাকার একটি অস্থায়ী সেতু। এতে করে আখাউড়া-আগরতলা সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এছাড়াও প্রায় ১০টি ব্রীজ আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ক্ষতিগ্রস্ত লোকদেরকে উপজেলার ১১টি আশ্রয় কেন্দ্রে সরিয়ে নেয়া হয়। তবে পানি কমতে থাকায় শুক্রবার ৪টি আশ্রয় কেন্দ্রে থাকা লোকজন নিজ নিজ বাড়িতে ফিরে গেছে।
উপজেলার মোগড়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মোঃ আব্দুল মতিন ও দক্ষিণ ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মোঃ জালাল উদ্দিন জানান, তাদের দুই ইউনিয়নের বেশিরভাগ এলাকাতেই পানি কমে গেছে। এখন আর কেউ আটকে থাকার মতো অবস্থায় নেই। পর্যাপ্ত ত্রাণ সুবিধাও পাওয়া যাচ্ছে বলে তারা জানান।
এ ব্যাপারে আখাউড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) গাজালা পারভীন রুহি জানান, মঙ্গলবার থেকে দেখা দেওয়া বন্যায় মোট ৪৭ গ্রাম প্লাবিত হয়। এতে ১৬৯৭ পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েন। তাদেরকে উপজেলার ১১টি আশ্রয় কেন্দ্রে নিয়ে আসা হয়েছিল। তবে পানি কমতে থাকায় ৪টি আশ্রয় কেন্দ্রের লোকজন বাড়িতে ফিরে গেছে।
তিনি বলেন, বন্যার্তদের সহায়তায় জেলা প্রশাসন থেকে তাৎক্ষনিক ১৫ মেঃটঃ চাল ও নগদ ৫ লাখ টাকা পাওয়া যায়। এর মধ্যে শুক্রবার পর্যন্ত ৫২০টি পরিবারের মধ্যে ২০ কেজি করে চাল দেয়া হয়েছে। ৬০০ পরিবারকে দেয়া হয়েছে শুকনো খাবার।
তিনি বলেন, পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্য মতে গত ২৪ ঘন্টায় হাওড়া নদীর লেভেলে ৬ সেঃ মিটার পানি হ্রাস পেয়েছে। আখাউড়ার বন্যা পরিস্থিতি উন্নতির দিকে। আগামী দুই-একদিনের মধ্যে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে বলে আশা করছি।