নিউজ ডেস্ক,
প্রায় ৬ হাজার কিলোমিটার দূরত্বের দুই ধর্মের দুই নাগরিকের ফেসবুকে পরিচয়। পরিচয় থেকে দু’জনের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। প্রেমের টানে ইউক্রেনের নাগরিক এন্ড্রি প্রকিপ নামে এক যুবক বাংলাদেশে আসেন। ধর্ম পরিবর্তন করে ইসলাম ধর্ম গ্রহন করে বাংলাদেশের ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগর উপজেলার বৃষ্ট্রি আক্তার নামক এক মেয়েকে বিয়ে করেন। স্বামীর সাথে নাম মিলিয়ে বৃষ্টির নাম এখন বৃষ্টি প্রকিপ। বিষয়টি এলাকায় বেশ আলোচনা সৃষ্টি করেছে।
ইউক্রেনের নাগরিক এন্ড্রি প্রকিপ ইসলাম ধর্ম গ্রহণের পর বর্তমানে তার নাম মোহাম্মদ। গত ১৯ ডিসেম্বর বেলজিয়াম থেকে বাংলাদেশে এসে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আদালতে পৌছে হলফনামার মাধ্যমে ধর্ম পরিবর্তন করেন তিনি।
জেলার বিজয়নগর উপজেলার বিষ্ণুপুর ইউনিয়নের ভারত সীমান্ত ঘেঁষা পূর্ব কালাছড়া গ্রামের মৃত কামাল মিয়ার বড় মেয়ে বৃষ্টি আক্তারকে (২৬) বিয়ে করেন। বৃষ্টি জাতীয় পরিচয়পত্রে নিজের নাম পরিবর্তন করে বৃষ্টি পুরকিপ রেখেছেন। পাঁচ বোন ও এক ভাইয়ের মধ্যে বৃষ্টি সবার বড়। পড়াশোনা করেছেন এসএসসি পর্যন্ত।
সোমবার সকালে বিজয়নগর উপজেলার বিষ্ণুপুর ইউনিয়নের সীমান্তবর্তী কালাছড়া গ্রামে দেখা মিলে বৃষ্টি ও প্রকিপের। কথা বলেন তাদের ভালোবাসা নিয়ে। জানালেন বিয়ে করতে পেরে তারা খুশি। সবার দোয়া চান তারা।
কালাছড়া গ্রামের কামাল মিয়ার মেয়ে বৃষ্টি। এসএসসি পাস। টুকটাক ইংরেজি জানেন। বছর দুয়েক আগে ফেসবুকে রিকোয়েস্ট পাঠান প্রকিপকে। সেই থেকে প্রেমের শুরু। গত ১৯ ডিসেম্বর বেলজিয়াম থেকে বাংলাদেশে আসেন প্রকিপ। সেদিনই বিয়ে করেন বৃষ্টিকে।
বৃষ্টি পুরকিপ বলেন, এন্ড্রি প্রকিপ নিজে থেকে বিয়ে করবেন এবং ধর্ম পরিবর্তন করার প্রস্তাব দেন। ওকে আমি বিশ্বাস করি। কারণ একটি আংটি কেনার জন্য ও আমার কাছে টাকা পাঠায়। আংটিটি এখনো আমার হাতে আছে। ১৯ ডিসেম্বর দেশে এসে আমাকে বিয়ে করার কথা জানায়। ওর ওই কথায় আমার নূন্যতম সংশয় হয়নি এবং সে আসবে আমি নিশ্চিত ছিলাম। আমাদের বিয়েতে পরিবারের সম্মতি ছিল। এর আগে আমি আমার জাতীয় পরিচয়পত্র প্রস্তুত করে নিজের নাম বৃষ্টি পুরকিপ রেখেছি।
এন্ড্রি প্রকিপ ওরফে মোহাম্মদ বলেন, আমি ইসলাম ধর্ম গ্রহন করেছি। নিজের নতুন নাম রেখেছি মোহাম্মদ। আমি আনন্দিত। ফেসবুকে দুই বছর আগে বৃষ্টির সাথে পরিচয়। বৃষ্টি মুসলিম মেয়ে, অনেক ভালো এবং আমার দেশের মেয়েদের তুলনায় অনেক ভিন্ন ও ব্যতিক্রমধর্মী। তাই ১৯ বেলজিয়াম থেকে এখানে এসে তাকে বিয়ে করেছি। এক মাস পর চলে যাব। সকল প্রক্রিয়া শেষের তাকে সাথে নিয়ে যাব।
ইউনিয়ন পরিষদ মেম্বার ফরহাদ আলী বলেন, প্রেমের এমন ঘটনায় তারা সবাই খুশি। এ দম্পত্তিকে দেখতে দূর দুরান্ত থেকে অনেকেই ছুটে আসছেন।