Advertisement

টাউনখালে মধ্যে পিলার, খালটি হারাতে বসেছে তার শত বছরের ঐতিহ্য।

NewsBrahmanbaria

এই আর্টিকেল টি ৫৫০।

স্টাফ রিপোর্টার:

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ থেকে আখাউড়া স্থল বন্দর পর্যন্ত চারলেন মহাসড়ক প্রকল্পের অংশ হিসেবে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার শহর বাইপাস সড়কের পুনিয়াউট থেকে বিরাসার মোড় পর্যন্ত বিশাল ওভারপাস নির্মাণ করা হচ্ছে। এই ওভাপাস নির্মাণের জন্য ব্রাহ্মণবাড়িয়ার শহরে ঐতিহ্যবাহী টাউন খালের মাঝখানে নির্মিত হচ্ছে ওভারপাস সেতু পিলার। ইতোমধ্যেই পিলার বেইজ ঢালায়ের কাজ শেষ হয়ে গেছে। এতে করে খাল দিয়ে নৌকা চলাচলসহ খালে স্বাভাবিক পানির প্রবাহ বাধাগ্রস্ত হবে বলে মনে করছেন সামাজিক সংগঠন খাল ও নদীকর্মীসহ শহরবাসী।

এ কারণে খালটি হারাবে তার শত বছরে ঐতিহ্য। টাউন খালটি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার শহরের তিতাস নদীর কান্দিপাড়া টানবাজার এলাকা থেকে শুরু হয়ে শহরের গোকর্ণঘাট দিয়ে আবার তিতাস নদীতে মিলিত হয়েছে। পৌরসভা সূত্রে জানা যায়, খালটির দৈর্ঘ্য ৪ দশমিক ৮০ কিলোমিটার। প্রস্থ ৫০-৯০ ফুট। গভীরতা ২০-৩০ ফুট। তবে জেলা পরিষদের খতিয়ান অনুযায়ী খালটি আয়তন ৮ দশমিক ৩৫ একর। খালটি জেলা পরিষদের হলেও এর গভীরতা ও প্রশস্ততার কোনো হিসাব নেই তাদের কাছে।

২০০৮-২০১২ সালে ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌরসভা বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে প্রায় সাত কোটি টাকা ব্যয়ে খালটির সৌন্দর্যবর্ধনের জন্য শহরের টানবাজার ও কান্দিপাড়া এলাকা থেকে ঘোড়াপটির সেতু (ফকিরাপুল) হয়ে কাজীপাড়া পর্যন্ত খালের দুই পাড়ে সিসি বøক বসানো হয়েছিল। খালপাড়ে এলাকাবাসীরা চলাচলে জন্য নির্মাণ করা হয়। পৌরসভা ও জেলা পরিষদের রক্ষণাবেক্ষ ও তদারকির অভাবে খালের পাশের বাসিন্দাদের ব্যবহার্য ময়লা আবর্জনা ও বর্জ্য ফেলার কারণে বর্তমানে কমে গেছে খালের গভীরতা ও প্রশস্ততা। খালের বিভিন্ন স্থানে ভরাট করে প্রভাবশালীরা খালের জায়গা দখল করে নিয়েছে।

পৌরসভার ৬নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ওমর ফারুক জীবন বলেন, খালের মাঝখানে পিলার হলে পানিপ্রবাহ বাধাগ্রস্ত হবে। তৈরি হবে নাব্যতা সংকট। পানি ফুলে দুই পাশের পাড় ভেঙ্গে যাবে।

এ বিষয়ে নদী ও প্রাণ-প্রকৃতি সুরক্ষা সামাজিক সংগঠন নোঙরের ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা শাখার সভাপতি শামীম আহমেদ বলেন, খালের মাঝখানে পিলার নির্মাণের বিষয়টি নদী রক্ষা কমিশনের চেয়ারম্যান, জেলা প্রশাসক ও জেলা পরিষদ প্রশাসককে লিখিতভাবে জানিয়েছি। তাতে কোনো সাড়া মেলেনি। টাউনখাল রক্ষায় নোঙর দীর্ঘদিন যাবৎ পাঁচ দফা দাবি আদায়ে আন্দোলন করে যাচ্ছে বলে তিনি জানান।

এ ব্যাপারে আশুগঞ্জ-আখাউড়া চার লেন মহাসড়ক প্রকল্পের বিশ্বরোড মোড় থেকে ধরখার পর্যন্ত অংশে প্রকল্প ব্যবস্থাপক খন্দাকার গোলাম মোস্তফা বলেন, মূল সড়কে রেললাইন থাকায় ওভারপাস নির্মাণের জন্য পিলার স্থাপন করা হবে। বর্তমানে খালের প্রশস্ততা অনেক কম। পৈরতলা অংশে সেতুটির দৈর্ঘ্য ২৫-৩০ ফুট। সেতু সংলগ্ন খালের মাঝখানে দুই মিটার দৈঘ্যের পিলার নির্মাণ করা হচ্ছে। খালের ওই অংশে খনন করে প্রায় ২০মিটার পর্যন্ত প্রশস্ততা বাড়ানো হবে। আশা করি এতে কোনো সমস্যা হবে না।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌরসভা মেয়র মিসেস নায়ার কবির বলেন, খালের রক্ষণবেক্ষণের দায়িত্ব জেলা পরিষদের। কাজ শুরুর সময় কেন তার কথা বলেনি বা আপতি তোলেনি, এ বিষয়টা তারা বলেতে পারবে।

এদিকে জেলা পরিষদ প্রশাসক শফিকুল ইসলাম বলেন, চারলেন প্রকল্পের কেউই আমাদের সাথে যোগাযোগ করেনি। বিষয়টি তিনি সাংবাদিকদের মাধ্যমে অবগত হয়েছেন।

এ ব্যাপারে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা প্রশাসক শাহগীর আলম বলেন, চারলেন একটি আন্তর্জাতিক প্রকল্প। সেতুর ওইখানে মাটির নিচে তিন কোটি টাকার কাজ করা হয়েছে। ঈদুল ফিতরের আগে দিন তিনি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। প্রকল্পে কাজ শুরুর সময় পৌর কর্তৃপক্ষ,জেলা পরিষদ, কাউন্সিলর ও স্থানীয় লোকজন কেউ কথা বলেনি। চারলেন প্রকল্প কমিটি একটি বিকল্প উপায় বের করেছে। তারা ওই অংশে পিলারের দুই পাশে খালের প্রশস্ততা বাড়িয়ে দুইপাড়ে গাইড ওয়াল নির্মাণ করে দেবেন বলে জানিয়েছেন।

Advertisement

Sorry, no post hare.

Social Media Auto Publish Powered By : XYZScripts.com