স্টাফ রিপোর্টার,
সরাইলে তিন জুয়ারিকে হাতে নাতে আটক করে থানা পুলিশ। একজন জনপ্রতিনিধি ওই জুয়ারিদের ছাড়িয়ে আনতে যান থানায়। অভিযোগ রয়েছে থানার এসআই মিজান ৩ জুয়ারিকে মুক্তি দিতে ফি দাবি করেন ১ লাখ টাকা। দাবিকৃত অর্থের পরিমাণ শুনে ভ্যাবাচেকা হয়ে ফিরে যান ইউপি সদস্য মোঃ বশির উল্লাহ।
রাত পার করে পরের দিন সকাল বেলা কালিকচ্ছ সিএনজি ষ্ট্যান্ডের পাহারাদার লস্কর মিয়ার মাধ্যস্থতায় ১৯ হাজার পাঁচশত টাকায় রফাদফা করে থানা থেকে ছেড়ে দেওয়া হয় ওই তিন জুয়ারিকে। ইউপি সদস্য ও স্থানীয়রা জানায়, গত ২৮ সেপ্টেম্বর রাতে কালিকচ্ছ ইউনিয়নের ধর্মতীর্থ এলাকার সফল ব্রিকসের নিকটে জুয়ার আসর বসে। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে রাত ১২টার দিকে সেখানে অভিযান চালান এস.আই মিজানুর রহমান। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে জুয়ারিরা পালাতে থাকে। ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ ইখতিয়ার (২৩), শহিদুল্লাহ (৩৫) ও ইসমাইল (২৫) নামের তিন যুবককে আটক করেন। গভীর রাতে তাদের বিষয়ে জানতে থানায় আসেন ৩ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য হাফেজ মো. বশির উল্লাহ। এস আই মিজানের সাথে তিন যুবককে ছাড়িয়ে নিতে কথা বলেন বশির উল্লাহ। মিজান তখন তিন জনকে থানা থেকে মুক্তি দেওয়ার ফি দাবি করেন ১ লাখ টাকা। টাকার পরিমাণ শুনে থমকে যান তিনি। নানা কথার পর কিছুটা নীচে নেমে আসে পুলিশ। এবার দাবি করেন ১৫ হাজার করে ৩ জনের ৪৫ হাজার টাকা।
বশির উল্লাহ বলেন, তিন যুবকের পরিবারই অর্থনৈতিক ভাবে দূর্বল। তারা এত টাকা দিবে কোথা থেকে? রাতে কোন ফায়সালা না হওয়ায় ফেরৎ আসেন ওই জনপ্রতিনিধি। ওই রাতেই জুয়ারিদের ছাড়িয়ে আনতে থানায় তদ্বির করেন বাজারের পাহারাদার লস্কর মিয়া। তখন আরো কমে এসেছে জুয়ারি মুক্তির ফি। লস্করের সাথে পুলিশের সর্বশেষ রফাদফা হয় প্রত্যেকে ৬ হাজার ৫শত টাকা করে মোট ১৯ হাজার ৫শত টাকা। টাকা প্রদানের পর পরের দিন অর্থাৎ ২৯ সেপ্টেম্বর সকালে থানা থেকে মুক্তি মিলে ওই তিন জুয়ারির।
ইউপি সদস্য মো. বশির উল্লাহ বলেন, জুয়া থেকে ধরেছেন। উনারা তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিবেন। আদালতে পাঠাবেন। তা না করে দর কষাকষি করে ১৯ টাকা নিয়ে ছেড়ে দিলেন। আমি নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি। আমি জানতে গেলাম আমার কাছে চাইলেন ১ লাখ টাকা। আমার চেয়ে বাজারের পাহারাদারকে বেশী মূল্যায়ন করলেন। এটা কোন পুলিশি সেবা বুঝলাম না। এভাবে কি জুয়া রোধ হবে? নাকি আরো বাড়বে।
এ বিষয়ে এস আই মিজান গতকাল বিকাল ৪টা ৪ মিনিটে মুঠোফোনে (০১৭১২-১৭৮৪৬৬) প্রথমে বলেন, আমি ওই এলাকা থেকে কোন জুয়ারি ধরিনি। বশির উল্লাহ মেম্বারের সাথে কোন কথা হয়নি। মেম্বারকে আমি চিনিও না। আবার ৪টা ৭ মিনিটে উনার মুঠোফোনে ফোন করে বলেন, ভাই এ বিষয়ে আমি আপনার সাথে কথা বলব। প্লিজ ভাই কথা বলব।