স্টাফ রিপোর্টার,
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগর উপজেলার সদর ইউনিয়ন ভূমি সহকারি কর্মকর্তা বজলুল হকের বিরুদ্ধে আনীত ঘুষ, দুর্নীতি ও বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগ সত্য প্রমানিত হয়েছে। জেলা প্রশাসক হায়াত-উদ-দৌলা খাঁন স্বাক্ষরিত তদন্ত প্রতিবেদনে এর সত্যতা নিশ্চিত করা হয়।
তদন্ত প্রতিবেদনে ঘুষ, দুর্নীতির অভিযোগের সত্যতা পাওয়ার পর বজলুল হকের পদ অবমনিত করা হয়েছে। জেলা প্রশাসক হায়াত-উদ-দৌলা খাঁন গত ১৬ অক্টোবর এই আদেশ দেন। বজলুল হককে তার পূর্বের পদ ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা থেকে উপ-সহকারী ভূমি কর্মকর্তা হিসেবে নিম্ন পদে অবনমিতকরণ করা হয়েছে।
জেলা প্রশাসক হায়াত-উদ-দৌলা খাঁন তাঁর আদেশে উল্লেখ করেন, মিহির দেবসহ আরো কয়েকজন বজলুল হকের বিরুদ্ধে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ আনেন। এ অবস্থায় গত ১৩ জুন তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। পরে তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা দেয়া হয়। নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট তনিমা আফ্রাদ মামলার তদন্ত করেন। গত ৩ অক্টোবর দেয়া তদন্ত প্রতিবেদনে বজলুল হককে দোষী সাব্যস্ত করা হয়।
উলে¬খ্য, দুর্নীতিবাজ এই ভূমি কর্মকর্তার বিরুদ্ধে নাসিরনগর উপজেলার সদর ইউনিয়নের কামারগাঁওয়ের জহরলাল দেবের ছেলে মিহির দেব সহ পাঁচজন উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে ঘুষ গ্রহণসহ সহ বিভিন্ন অনিয়মের লিখিত অভিযোগ দেন। পরবর্তীতে সহকারী ভূমি কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট তনিমা আফ্রাদ এই অভিযোগ গুলোর প্রাথমিক সত্যতা প্রমাণিত হওয়ায় ১৩ জুন বজলুল হককে চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত করেন। পরে গত ২১ জুলাই বজলুল হকের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা হলে দশ কার্যদিবসের মধ্যে জবাব দিতে বলা হয়।
এই প্রেক্ষিতে গত ৭ আগস্ট অভিযুক্ত বজলুল হক ও অভিযোগকারীদের লিখিত জবাব ও শুনানি গ্রহণ করা হয়। বজলুল হকের লিখিত জবাব সন্তোষজনক না হওয়ায় সরকারি কর্মচারী ( শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা ২০১৮ মোতাবেক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য সুপারিশ করা হয়। পরবর্তীতে গত ৩ অক্টোবর তদন্তকারী কর্মকর্তা সহকারী কমিশনার ( ভূমি ), নাসিরনগর, ব্রাহ্মণবাড়িয়া কর্তৃক প্রেরিত প্রতিবেদনের প্রেক্ষিতে অভিযুক্ত কর্মকর্তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগসমূহ সন্দেহাতীতভাবে প্রমানিত হওয়ায় সরকারি কর্মচারী শৃঙ্খলা বিধিমালা ২০১৮ এর ৩ (খ) ধারায় অসদাচরণের দায়ে ৩(ঘ) (ই) এর বিধানমতে দুর্নীতিপরায়নতা
অব্যাহত রাখায় একই বিধিমালার ৪(৩) (ক) বিধি অনুযায়ী তাকে নিম্নপদে অবনমিতকরণ এর সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। যেহেতু অভিযুক্ত কর্মকর্তার লিখিত জবাব ও ব্যক্তিগত শুনানিতে তার জবাব সন্তোষজনক বিবেচিত হয়নি এবং তার বিরুদ্ধে আনীত সকল অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে সেহেতু সার্বিক বিবেচনায় অভিযুক্ত কর্মচারীকে গুরুদণ্ড প্রদানের চুড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়।
গত ১৬ অক্টোবর জেলা প্রশাসক হায়াত – উদ – দৌলা খাঁন কর্তৃক স্বাক্ষরিত এক তদন্ত প্রতিবেদনে এ বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া গেছে।
এ ব্যাপারে তদন্তকারী কর্মকর্তা সহকারী ভূমি কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট তনিমা আফ্রাদের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি সাংবাদিকদের জানান, অভিযুক্ত বজলুল হককে গুরুদণ্ড দেওয়া হয়েছে। তার পূর্বের পদ ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা থেকে উপ-সহকারী ভূমি কর্মকর্তা হিসেবে নিম্ন পদে অবনমিতকরণ করা হয়েছে।