নিউজ ডেস্ক,
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার কসবা উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ব্যালট খোলার আগেই প্রকাশ্যে ভোট দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। মঙ্গলবার (২১ মে) সকাল ৯টা ১৬ মিনিটে উপজেলার কুটি অটল বিহারী উচ্চ বিদ্যালয় ভোটকেন্দ্রে এ ঘটনা ঘটে।
জানা যায়, ওই ভোটকেন্দ্রের চার নম্বর নারী বুথে ঢুকে যান একজন ভোটার। তখনও সহকারী প্রিসাইডিং কর্মকর্তা বান্ডিল থেকে ব্যালট পেপার ছিঁড়ে ভোটারের হাতে দেননি। কিন্তু এর আগেই সহকারী প্রিসাইডিং কর্মকর্তার টেবিলে থাকা ব্যালট পেপারে সিল মেরে দেন ওই ভোটার। এর চার মিনিট আগে পাশের পুরুষ বুথে খোদ এক প্রার্থীর এজেন্ট পোলিং অফিসারের টেবিলেই ব্যালট পেপারে সিল মেরেছেন।
নারী বুথে উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী ও কসবা পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. শফিকুল ইসলামের চশমা প্রতীকে এবং পুরুষ বুথে উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থী ছাইদুর রহমান স্বপনের কাপ-পিরিচ প্রতীকে সিল মারা হয়েছে। কাপ-পিরিচ প্রতীকের প্রার্থী ছাইদুর রহমান স্বপনের বাড়ি কুটি গ্রামে। তিনি আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের ফুফাতো ভাই।
খবর পেয়ে ওই কেন্দ্রের প্রিসাইডিং অফিসার আমজাদ হোসেন ভোটকক্ষে গিয়ে এ বিষয়ে সবাইকে সতর্ক করেন।
ব্যালটে সিল মারা প্রসঙ্গে চার নম্বর বুথে দায়িত্বরত সহকারী প্রিসাইডিং কর্মকর্তা মো. রাসেল উদ্দিন অসহায়ত্ব প্রকাশ করে বলেন, আমি কিছু করতে পারিনি।
বিষয়টি জানতে পেরে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হাবিবুর রহমান ওই কেন্দ্রে এক নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে বিজিবির স্ট্রাইকিং ফোর্সকে পাঠান। নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নাহিদা আক্তার ঘটনাস্থলে পৌঁছে ভোটকেন্দ্রে গিয়ে ওই ভোটারদের খুঁজে পাননি।
প্রিসাইডিং কর্মকর্তাকে সঙ্গে নিয়ে নাহিদা আক্তার ঘটনাস্থলে গিয়ে জানতে পারেন যে, ওই ভোটাররা চলে গেছেন। পরে তিনি প্রিসাইডিং কর্মকর্তাকে বিষয়টি লিখিতভাবে বিচারিক ম্যাজিস্ট্রেটকে অবগত করে নাম অনুযায়ী ওই ভোটারকে ডেকে এনে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলেন।
প্রিসাইডিং অফিসার আমজাদ হোসেন জানান, এই কেন্দ্রের আটটি বুথে সুষ্ঠুভাবে ভোটগ্রহণ চলছে। এখানে মোট ভোটার সংখ্যা তিন হাজার ৮১৯। যেকোনো ধরনের বিশৃঙ্খলা এড়াতে বুথ কর্মকর্তাদের সতর্ক করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, দ্বিতীয় ধাপের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া ও কসবা উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের ভোটগ্রহণ চলছে। নির্বাচনকে নির্বিঘ্ন ও শান্তিপূর্ণ করতে প্রশাসনের পক্ষ থেকে ব্যাপক প্রস্তুতিগ্রহণ করা হয়েছে। সকাল থেকেই আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা প্রতিটি কেন্দ্রের নিরপত্তায় দায়িত্ব পালন করছেন। এছাড়াও কসবা উপজেলায় মোবাইল টিম ৩৩টি, স্ট্রাইকিং টিম ২টি, স্ট্যান্ডবাই টিম ১টি, স্পেশাল মোবাইল টিম ১৫টি, আখাউড়া উপজেলায় মোবাইল টিম ২০টি, স্ট্রাইকিং টিম ২টি, স্ট্যান্ডবাই টিম ১টি, স্পেশাল মোবাইল টিম ১২টি রয়েছে।
রিটার্নিং কর্মকর্তা মোঃ সাইফুল ইসলাম জানান, নির্বাচনে আইন শৃংঙ্খলা রক্ষায় ১০২৯ জন পুলিশ, র্যাব, ৪ প্লাটুন বিজিবি ও আনসার বাহিনীর পাশাপাশি ২৩ জন নির্বাহী ম্যজিস্ট্রেট এবং দুইজন জুডিসিয়াল ম্যজিস্ট্রেট দায়িত্ব পালন করছেন।