স্টাফ রিপোর্টার:
ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার সুলতানপুর ইউনিয়নে হাবলাউচ্চ গ্রামের আব্দুল হাসিম মিয়ার ছেলে স্বপন মিয়া (৪০) তিতাস নদীর পারে বার- আওলিয়ার বিলে মাছ ধরতে গিয়ে মারা যায়। মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ ময়নাতদন্তের পর গত ৮ জুন সদর থানায় নিহত স্বপনের স্ত্রী রোকেয়া বেগম বাদী হয়ে অজ্ঞাত আসামী করে একটি মামলা দায়ের করেন। নিহত স্বপন মিয়া পরিবার নিয়ে বাস করতেন গত ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচনে নৌকা প্রতীকের সাথে পরাজিত প্রার্থী মহসিন মিয়ার চাচাতো ভাইয়ের বাড়িতে।
ইউপি নির্বাচনে যারা মহসিনের বিরোধীতা করে নৌকা প্রতীকের বিজয়ী চেয়ারম্যানের পক্ষে কাজ করেছে তাদের বিভিন্ন সময়ে হুমকি ও ফাঁসানোর জন্য মরিয়া হয়ে থাকতেন মহসিন। স্বপন মিয়া লাশ উদ্ধারের পর এটিকে পুঁজি করে নির্বাচনে রেশারেশিকে কাজে লাগানোর জন্য ইউনিয়নের বিরামপুর, শিলাউর, হাবলাউচ্চ ও ঈশাননগর এই গ্রামের লোকদের ফাঁসানোর জন্য নতুন ছক করে সে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বেশ কয়েকজন গ্রমবাসীর সাথে কথা হয় তারা জানান, নির্বাচনে পরাজিত হওয়ার পর তার বিরোধী সমর্থক যারা ছিলেন তাদেরকে সে ফাঁসানোর জন্য বিভিন্ন ভাবে পায়তারা করে আসছেন। মহসিন নিজেও ২০১৩ সালে শিলাউর গ্রামের জমসেদ হত্যা মামলার ১ নং আসামী। এছাড়া ২০১৬ সালে আনোয়ার হোসেন (আন্নু) হত্যারও সে আসামী। দীর্ঘ দিন যাবৎত মহসিনগংরা নিজের প্রভাবে এলাকার নিরীহ মানুষদের জায়গা সম্পওি দখলসহ বিভিন্ন নির্যাতন করে যাচ্ছেন। মহসিন পরিবার ছিল স্বাধীনতা বিরোধী। এটা সবাই জানে। স্বপনের কোন আত্মীয় স্বজন আমাদের গ্রামে নেই। সে মূলত রিফুজি।
ইউনিয়নের শিলাউর গ্রামের বাসিন্দা রফিকুল ইসলাম (রফু সর্দার) বলেন, যে লোকটি মারা গেছে সে অত্যন্ত নিরীহ প্রকৃতির ছিল। তার খুনের নেপথ্যে মহসিনগং জড়িত বলে আমরা মনে করি। তাদেরকে দ্রুত আইনের আওতায় আনার দাবি জানাচ্ছি। নির্বাচনে গ্রাম্য বিরোধের জের ধরে প্রতিপক্ষের লোকজনদের ফাঁসাতে গিয়ে ঘটনাটিকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার চেষ্টা হচ্ছে। এছাড়া বিভিন্ন লোকজনকে আসামী করার ভয় দেখিয়ে চাঁদা দাবী করছে মহসিনসহ তা ভায়েরা। এদের হুমকি ও নির্যাতনের ভয়ে অনেকে গ্রামছাড়া। আমরা সুষ্ঠু তদন্ত করে হত্যা ঘটনার মূল রহস্য উদঘাটন হোক এটা চাই।
আরেক বাসিন্দা শফিকুল মিয়া বলেন, আমি ব্যবসায়ী প্রয়োজনে ঢাকায় থাকি। কিন্তু আমাকে ফাঁসানোর জন্য বিভিন্ন চেষ্টা চলছে। আমরা প্রকৃত খুনীদের বের করার জন্য আইনশৃংখলা বাহিনীদের প্রতি অনুরোধ করছি।
এসব অভিযোগের বিষয়ে শেখ মোহম্মদ মহসিন মুঠোফোনে বলেন, আমার বিরুদ্ধে দুটি হত্যা মামলা আছে সত্য। এগুলো আদালতে চলমান। আর এলাকার মানুষকে ফাঁসানোর জন্য এ হত্যাকান্ডের আমার সম্পূক্ততা আছে তা সঠিক নয়। মানুষকে মামলার ভয়ভীতি দেখিয়ে চাঁদা আদায়ের বিষয়টি সঠিক নয়।
এ বিষয়ে সুলতানপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়াম্যান শেখ ওমর ফারুক বলেন, যারা এখন স্বপনের মৃত্যুকে অস্বাভাবিক বলছে, ঘটনায় দিন তারা তখন স্বপনের মৃত্যু কে স্বাভাবিক বলেছিল।
এ ব্যাপারে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানার (ওসি) মোঃ এমরানুল ইসলাম বলেন, এ মামলা সিআইডি তদন্ত করছে। এ ঘটনায় কিছু অজ্ঞাত ব্যক্তির নাম দিয়ে অভিযোগ করা হয়েছে। আমরা তদন্ত করছি। এঘটনায় যারা দোষী তাদের কে গ্রফতার করা হবে।