স্টাফ রিপোর্টার:
ভারতের প্রধান মন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ঢাকায় সফরকে কেন্দ্র্র করে উপ্তত্ত হয়ে উঠেছে ব্রাহ্মণবাড়িয়া। শুত্রবার দুপুর আড়াইটায় শহরের প্রধান সড়ক টিএ রোডে মাদ্রাসার ছাত্ররা ব্যাপক বিক্ষোভ শুরু করে। এসময় তারা প্রধান সড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দেয়। মুহুর্তের মধ্যে শহরের সমস্ত দোকান পাট বন্ধ হয়ে পড়ে। বিক্ষুব্ধরা সড়কের বিভিন্ন পয়েন্টে টায়ারে আগুন লাগিয়ে বিক্ষোভ করতে থাকে। পরে বিক্ষুব্ধরা বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে রেল স্টেশনে গিয়ে আগুন ধরিয়ে দেয়। রেল স্টেশনের সিগন্যাল, মাস্টার রুম, কন্ট্রোল রুম অন্যান্যদের কর্মকর্তাদের কক্ষ ব্যাপক ভাংচুর করে। সমস্ত মালামাল একত্রিত করে আগুন ধরিয়ে দেয়।
রেল লাইনের স্লিপার তুলে ফেলে বিক্ষুব্ধরা। সিগন্যাল বক্স ভেঙ্গে আগুন ধরিয়ে দেয়। এর ফলে ঢাকার সাথে সিলেট ও চট্টগ্রামের সাথে সকল প্রকার ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়ে পড়ে। ঢাকাগামী কর্ণফুলী এক্সপ্রেস ট্রেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলস্টেশনে প্রবেশ করার সময় বিক্ষুব্ধরা পাথর নিক্ষেপ করলে ট্রেনটি ফিরে যায়। জেলা পরিষদ কার্যালয় বিকেল সোয়া ৫টায় ব্যাপক হামলা চালানো হয়। শহরের কাউতলী, ভাদুঘরে ব্যাপক ভাংচুর চালানো হয়। সড়কে আগুন ধরিয়ে রাস্তায় অবরোধ করা হয়। ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের বিশ^রোড, কুমিল্লা-সিলেট মহাসড়কের ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সুহিলপুর, নন্দনপুর, মজলিশপুর, ঘাটুরাসহ বিভিন্ন স্থানে সড়কে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করা হয়। এ ঘটনায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া সাথে দেশের বিভিন্ন স্থানে দূরপাল্লা সকল যানবাহন বন্ধ রয়েছে। শহরের জেলা পরিষদ, পৌর মুক্ত মঞ্চ, পৌর মার্কেটসহ বিভিন্ন স্থানে বঙ্গবন্ধুর ম্যুারাল ভেঙ্গে ফেলে। স্বাধীনতা সুবর্ণ জয়ন্তী উপলক্ষে বিভিন্ন স্থানে আলোকসজ্ঝা ও সড়ক সজ্জিতকরণ ব্যানার ফেস্টুরন ভেঙ্গে আগুন ধরিয়ে দেয় বিক্ষুব্ধরা। শহরের বিভিন্ন স্থানে স্থাপন করা সিসিটিভি ক্যামেরা ভাংচুর করা হয়।
উগ্র বিক্ষুব্ধরা নরেন্দ্র মোদী বিরোধী শ্লোগান দেয়। এক সময় বিক্ষুব্ধরা জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, জেলা জজ এর বাস ভবনের মূল ফটকে হামলা চালায়। পরবর্তীতে বিক্ষুব্ধ প্রায় ৫শতাধিক লোক জেলা পুলিশ সুপার কার্যালয়ে হামলা চালিয়ে গ্যারেজে থাকা গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয়। হামলা চালিয়ে ভাংচুর করা ভবনের নিচ তলার জানালা। বিকেলের দিকে শহরের কাউতলী এলাকার দাতিয়ারা গ্রামের সাগর মিয়ার ছেলে আশিক (২৫) গুরুতর আহত হয়ে জেলা সদর হাসপাতালে নিয়ে আসলে চিকিৎসারত অবস্থায় মৃত্যু হয়। পরে বিক্ষুব্ধরা লাশ নিয়ে শহরের প্রধান প্রধান সড়কে বিক্ষোভ শুরু করে। পরে লাশ নিয়ে মাদ্রাসায় নিয়ে যায়।
হাসপাতাল সুত্রে জানা যায়, এখন পর্যন্ত ২নং পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ নুরে আলম, পুলিশ সদস্য সহ ২০জন আহত হয়। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত শহরে থম থমে অবস্থা বিরাজ করছিল। সারা শহরে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। তবে জেলা পুলিশ সুপার আনিসুর রহমান নিহত হবার ঘটনা জানেন না বলে জানান। পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে।