স্টাফ রিপোর্টার:
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় সরাইলের শাহবাজপুরে হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদের নেতার বিরুদ্ধে ভূমিদস্যুর অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনার প্রতিকার চেয়ে সাংবাদিক সম্মেলণ করেছেন ক্ষতিগ্রস্থ ভূমি মালিক ও তার স্বজনরা। এজন্যে সংখ্যালঘু ইস্যু সৃষ্টি করে সরকারের ভাবমূর্তি বিনষ্ট করারও অভিযোগ আনা হয় জেলা হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদ সভাপতি দিলীপ কুমার নাগের বিরুদ্ধে।
সোমবার দুপুরে ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেস ক্লাবে সংখ্যালঘু সম্পত্তি দখলের মিথ্যা প্রচারনা চালিয়ে সম্মানহানি ঘটানোর প্রতিবাদ এবং ভূমিদস্যু চক্রের বিচার দাবীতে সাংবাদিক সম্মেলনে এই অভিযোগ করেন সাবেক জাতীয় পরিষদ সদস্য ও পার্লামেন্ট সেক্রেটারী প্রয়াত জিয়াউল আমিনের পুত্র ইকরামুল আমিন। তিনি লিখিত বক্তব্যে বলেন, দিলীপ নাগ একজন মুক্তিযোদ্ধা হয়েও দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বে বিশ্বাস করেন না। তিনি দেশের সরকার ও প্রশাসনকে পাশ কাটিয়ে ব্যাক্তিগত সম্পত্তির ঝামেলায় প্রতিবেশী দেশের দূতাবাসকে ডেকে আনার হুমকী দিয়েছেন।
এর আগে দিলীপ কুমার নাগ সংখ্যালঘু সম্পত্তি দখলের অভিযোগ এনে ইকরামুল আমিনের বিরুদ্ধে সাংবাদিক সম্মেলন ও মানববন্ধন করেন। একাধিক মামলাও দেন তিনি ইকরামুল আমিনের বিরুদ্ধে।
তিনি লিখিত বক্তব্যে আরো বলেন, তার পিতা জিয়াউল আমিন জীবিত থাকাকালে ১৯৬৮সালের ৬নভেম্বর অবনিপাল গং এর কাছ থেকে ৩৭৫৮ নং সাফ কাবলা দলিলমুলে শাহবাজপুর মৌজার হাল সে: মে: ৪৩৬৬, ৪৩৬৭, ৪৩৬৮ দাগের ৩৪ শতক ভূমি ক্রয় করেন। ওই দলিলে গ্রামের পাল পাড়ার বাসিন্দা দিলীপ কুমার নাগের পিতা মৃত রবিন্দ্র মোহন নাগও স্বাক্ষী রয়েছেন। ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের পাশে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের উল্টো পাশের ওই জমিটি সময় পরিক্রমায় অতি মূল্যবান হয়ে উঠায় ভূমিদস্যু চক্রের লোলুপ দৃষ্টি পড়ে। জাল কাগজপত্র তৈরী করে এবং জনৈক অজ্ঞাত ব্যাক্তির কাছ থেকে ক্ষমতাপত্র অর্পনের মাধ্যমে ক্রয় করে ফেলার মিথ্যা প্রচারনা চালায়। শুধু তাই নয়, যেকোন সময় ওই ভূমি জোরপূর্বক দখল করে ঘর-বাড়ি নির্মান করে ফেলারও প্রচারনা চালাতে থাকে। এই তৎপরতার খবর পেয়ে গত ২নভেম্বর সরাইল থানায় একটি সাধারন ডায়েরী করেন তিনি। পাশাপাশি সরাইল থানার অফিসার ইনচার্জ ও পুলিশ সুপারের সঙ্গে একাধিকবার স্বাক্ষাত করে ভূমির মালিকানা সংক্রান্ত কাগজপত্র দাখিল করেন।
এছাড়া ব্রাহ্মণবাড়িয়া অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে ফৌ: কা: বি: আইনের ১৫৪ ধারায় পি-৯৩৯/২০২০ইং নং মোকদ্দমা দায়ের করেন। এই মোকদ্দমার খবর পেয়ে ভূমিদস্যু চক্র রাতের আধারে ৭০বছর ধরে তাদের ভোগদখলে থাকা খালি ভূমিতে জোরপূর্বক দুটি অস্থায়ী টিনের ঘর নির্মানের চেষ্টা চালায়। এতে ব্যর্থ হয়ে ইকরামুল আমিনসহ কয়েকজনের বিরুদ্ধে সরাইল থানায় একটি এবং ভূমিদস্যুদের একজন তার কন্যাকে দিয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে আরেকটি মামলা দায়ের করেন।
ইকরামুল আমিন অভিযোগ করেন, এতেও ক্ষান্ত না হয়ে সাম্প্রদায়িক ইস্যু সৃষ্টির মাধ্যমে ঘোলা পানিতে মাছ শিকারের চেষ্টা চালাতে থাকেন দিলীপ কুমার নাগ। তিনি হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদের ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার সভাপতি হওয়ার সুবাদে হিন্দু সম্পত্তি দখলের মিথ্যা প্রচারনার আশ্রয় নেন। এনিয়ে জেলা হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রীষ্টান ঐক্য পরিষদের ব্যানারে সাংবাদিক সম্মেলন এবং মানববন্ধন করে পরিস্থিতি উত্তপ্ত করে হিন্দু-মুসলমান ঐক্য বিনষ্টের ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হন। এই তৎপরতায় সরকারের ভাবমূর্তি নষ্ট করেন তিনি। তিনি তার সম্ভ্রান্ত পরিবারের বিরুদ্ধে এ ধরনের মিথ্যা প্রচারনা চালানো এবং তার পৈত্রিক সম্পত্তি গ্রাসের চেষ্টায় জড়িতদের বিচার দাবী করেন।