স্টাফ রিপোর্টার:
অবশেষে মায়ের কোলে ঠাঁই পেয়েছে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় রাস্তার পাশ থেকে কুড়িয়ে পাওয়া আনুমানিক পাঁচ মাস বয়সী ছেলে শিশুটি। ৫ লাখ টাকার বন্ডে শিশুটিকে দত্তক হিসেবে গ্রহন করেছেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার দুবলা গ্রামের নিঃসন্তান এক শিক্ষক দম্পতি। শিশুটির দত্তক নেয়া মা-বাবা দুজনই দুটি সরকারি কলেজের শিক্ষক।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট মোঃ মাসুদ পারভেজের নির্দেশে বৃহস্পতিবার বিকেলে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডাঃ শওকত হোসেন দত্তক মায়ের কোলে শিশুটিকে তুলে দেন।
আদালতের শর্তানুযায়ী দত্তক মাতা-পিতা পাঁচ মাস বয়সী শিশুটিকে নিজের সন্তানের মর্যাদায় লালন পালন ও সুশিক্ষায় শিক্ষিত করে তুলবেন। তাদের সন্তান জন্মলাভ করলেও দত্তক নেয়া শিশুটিকে সন্তানের মর্যাদায় লালন পালন, সুশিক্ষায় শিক্ষিত করা সহ তাদের সম্পত্তির উত্তারাধিকার করবেন। যদি কখনো শিশুটির প্রকৃত মা-বাবা উপযুক্ত প্রমান দিয়ে শিশুটিকে নিতে চায় তাহলে শিশুটিকে প্রকৃত অভিভাবকের কাছে ফেরত দিতে বাধ্য থাকবেন। এছাড়াও শিশুটির সঠিক পরিচর্যা ও দেখভাল হচ্ছে কিনা তা যাচাই-বাছাই করে জেলা সমাজসেবা অফিসার প্রতিবেদন দাখিল করবেন।
এর আগে গত ২৯ নভেম্বর রোববার সন্ধ্যা ছয়টার দিকে সদর উপজেলার বাসুদেব ইউনিয়নের ঢাকা-আগরতলা মহাসড়কের পাশে দুবলা গ্রামের একটি সড়কের পাশ থেকে দুবলা গ্রামের কৃষক জহিরুল ইসলাম ও তার স্ত্রী পারভীন আক্তার শিশুটিকে উদ্ধার করেন। পাঁচ মাস বয়সী শিশুটিকে সেখানে একটি কলাগাছের ঝোঁপে কাপড় দিয়ে মোড়ানো অবস্থায় ফেলে যায় কে বা কারা। শিশুটির কান্না শুনে জহিরুল ইসলাম ও তার স্ত্রী পারভীন আক্তার তাকে উদ্ধার করে বাড়িতে নিয়ে যান ও বিষয়টি গ্রামের গণ্যমান্য ব্যক্তিসহ পুলিশকে অবহিত করেন।
পরে রাতের বেলা সদর থানার পুলিশ শিশুটিকে জহিরুল ইসলামের বাড়ি থেকে উদ্ধার করে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে আসে ও হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে ভর্তি করে। কোন অভিভাবক না থাকায় নার্সদের সাথে জহিরুল ইসলাম দম্পতি শিশুটিকে দেখাশুনা করছেন। পরে শিশুটিকে দত্তক নিতে আগ্রহ প্রকাশ করেন জহিরুল ইসলাম ও তার স্ত্রী পারভীন আক্তার। এছাড়াও আরো নিঃসন্তান ১০ দম্পতি শিশুটিকে দত্তক নিতে আগ্রহ প্রকাশ করেন।
এ ব্যাপারে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডাঃ শওকত হোসেনের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, আদালতের নির্দেশে শিশুটিকে বৃহস্পতিবার বিকেলে তার দত্তক মায়ের কোলে তুলে দেয়া হয়েছে।