স্টাফ রিপোর্টার
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় চাল ক্রয়ের রশিদ দেখাতে না পারায় এক ব্যবসায়িকে ১ লাখ টাকা জরিমানাসহ তার দুটি চালের গুদাম সিলগালা ও বাড়তি মূল্যে পন্য সামগ্রী বিক্রি করার দায়ে আরো ৮ ব্যবসা প্রতিষ্ঠানকে ৬০ হাজার টাকা জরিমানা করেছেন ভ্রাম্যমান আদালত। সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট পঙ্কজ বড়–য়ার নেতৃত্বে রোববার দুপুর থেকে বিকেল পর্যন্ত জেলা প্রশাসনের পৃথক তিনটি ভ্রাম্যমান আদালত এই অভিযান চালায়।
ভ্রাম্যমান আদালত সূত্রে জানা গেছে, করোনাভাইরাস আতঙ্কে জেলা শহরের বিভিন্ন বাজারে ব্যবসায়িদের সিন্ডিকেট নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্য বাড়িয়েছেন বলে বিভিন্ন মাধ্যমে জানতে পারে জেলা প্রশাসন। পাশাপাশি শহরের আনন্দবাজারে মেসার্স ইব্রাহীম ট্রেডার্স নামক চালের আড়তদার মোঃ ইব্রাহীম নিজের গুদামে পর্যাপ্ত চাল মজুদ রেখে বাজারে দাম বাড়াতে সহযোগিতা করছেন বলে বিভিন্ন মাধ্যমে জানতে পারে জেলা প্রশাসন।
রোববার দুপুরে দিকে নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট ও সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) পঙ্কজ বড়–য়া র্যাব-১৪-এর ভৈরব ক্যাম্পের অধিনায়ক রাফিউদ্দীন মোহাম্মদ যোবায়েরকে সাথে নিয়ে আনন্দবাজারের মেসার্স ইব্রাহীম ট্রেডার্সে ভ্রাম্যমান আদালতের অভিযান পরিচালনা করেন। এসময় তাঁর দোকানে পর্যাপ্ত পরিমান চালের মজুদ দেখতে পান ভ্রাম্যমান আদালত। দোকানে মজুদ থাকা চালের ক্রয়রশিদ দেখাতে পারেননি ব্যবসায়ি মোঃ ইব্রাহীম।
এসময় ইব্রাহীমকে সাথে নিয়ে ভ্রাম্যমান আদালতের এই দল তার ঘাটুরা ও নিজ বাড়ি সদর উপজেলার নাটাইয়ের গোডাউনেও অভিযান চালান। ইব্রাহীমের ঘাটুরার চালের গোডাউনে ২ হাজার ২০০ চালের বস্তা ও নাটাইয়ের গোডাউনে ৪৪৭বস্তা চালের মজুদ পান। ইব্রাহীম এসব চালের ক্রয় রশিদ দেখাতে পারেননি।
ভ্রাম্যমান আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) পঙ্কজ বড়–য়া অতিরিক্ত চাল মজুদ রেখে বাজারে কৃত্রিম সংকট তৈরির অভিযোগে ইব্রাহীমকে এক লাখ টাকা জরিমানাসহ তাঁর ঘাটুরা ও নাটাইয়ের চালের গোডাউন সিলগালা করেন।
ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা সময় র্যাব-১৪ ভৈরব ক্যাম্পের অধিনায়ক অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রাফিউদ্দীন মোহাম্মদ যোবায়ের, সহকারি কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট রাজ কুমার বিশ্বাস, বাজার কর্মকর্তা নাজমুল হকসহ র্যাব ও পুলিশের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
এদিকে দুপুরে জেলার শহরের জগত বাজারে বেশি দামে রসুন ও আদা বিক্রির অভিযোগে দুটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানকে ১৫হাজার টাকা জরিমানা করেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও সহকারী কমিশনার প্রশান্ত বৈদ্য।
একই সময়ে জেলা শহরের আনন্দ বাজারে পেঁয়াজ, রসুন ও আদাসহ অন্যান্য নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্য বেশি দামের বিক্রির অভিযোগে ছয়টি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানকে ৪৫হাজার টাকা জরিমানা করেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও সহকারী কমিশনার।
নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) পঙ্কজ বড়–য়া বলেন, পর্যাপ্ত চাল মজুদ রেখে বাজারে কৃত্রিম সংকট তৈরি এবং চালের ক্রয় রশিদ দেখাতে না পারায় এক ব্যসায়িকে এক লাখ টাকা জরিমানাসহ তার দুটি গোডাউনকে সিলাগালা করা হয়েছে। দুটি গোডাউনে দুই হাজার ৬৪৭বস্তা চাল মজুদ রয়েছে। তিনি বলেন, ভ্রাম্যমান আদালতের অভিযান অব্যাহত থাকবে।