এনবি প্রতিনিধিঃ
ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার সুহিলপুরে প্রতিবন্ধী বৃদ্ধের কোটি টাকার বাড়ি দখলের পায়তাঁরা করছে এলাকার প্রভাবশালী ভূমিদূস্যরা। দেশ ছাড়া করাসহ প্রানে মারার হুমকিও দিচ্ছে ভূমিদস্যুরা। তাদের হাত থেকে নিস্তার পেতে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানসহ এলাকার সর্দারদের কাছে ধর্ণা দিয়েও রক্ষা পায়নি অসহায় পরিবারটি। দিশেহারা পরিবারটি এখন চরম আতংকে রয়েছে।
এ ঘটনার পর নিরাপত্তা চেয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, র্যাব-১৪ ও সদর থানায় অভিযোগ দেয় প্রতিবন্ধী বৃদ্ধ ফয়েজ মিয়া (৮০)। জানা যায়, প্রায় ৪৫ বছর পূর্বে ভারত থেকে স্থানান্তরিত হয়ে সদর উপজেলার সুহিলপুর ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ডের হিন্দুপাড়ায় বসতি করেন শারীরিক প্রতিবন্ধি বৃদ্ধ মোঃ ফয়েজ মিয়া। ৩২ শতাংশ জায়গায় বাড়ি-ঘর তৈরি করে ৬ ছেলে-মেয়েকে নিয়ে বসবাস করতে থাকেন। তার বড় ছেলে সৌদি প্রবাসী সালাউদ্দিন ইউসুফ। অন্য ছেলে নুরু নবী ট্রাক চালক। বর্তমানে ফয়েজ মিয়া ছেলে নুরু নবী ও মেয়ে রাখেলা বেগম এবং মানসিক প্রতিবন্ধি ছোট মেয়ে ফিরোজাসহ ১২জন নিয়ে বসবাস করছেন এই বাড়িতে। পরিবারের সদস্যদের অগোচরে সালাউদ্দিন ইউসুফ প্রবাসে থাকার সুযোগে তার স্ত্রীর রুনা বেগম এলাকার চিহ্নিত ভূমিদস্যু গফুর মিয়া ও হেলিম মিয়াসহ বিভিন্ন লোকজনের সাথে সখ্যতা গড়ে তোলে।
কয়েকদিন পূর্বে সালাউদ্দিনের স্ত্রী রুনা বেগম ২ সন্তানসহ পালিয়ে যায়। এরপর গফুর ও হেলিম প্রবাসীর স্ত্রী রুনার কাছে টাকা পায় বলে ফয়েজ মিয়ার বাড়ি দখলে লিপ্ত হয়। জোরপূর্বক দোচালা টিনের ঘর নির্মান করে। ঘটনাটি সুহিলপুর ইউপি চেয়ারম্যান আঙ্গুর হাজারী, স্থানীয় ওয়ার্ড মেম্বার বাবুল মিয়া, ইউনিয়ন আ’লীগের সভাপতি দুলাল খানকে জানালেও কোন সুরাহা হয়নি।
অভিযোগ রয়েছে, স্থানীয় ওয়ার্ড মেম্বার বাবুল মিয়ার চাচাতো ভাই ভূমিদস্যু গফুর মিয়া। তারই ছত্রছায়ায় বাড়ির জায়গা দখল করে ঘরটি তোলে গফুর ও হেলিম। ফয়েজ মিয়ার বাড়িটি কেনার জন্য প্রস্তাবও দেয় জনপ্রতিনিধিসহ স্থানীয় প্রভাবশালীরা। এদিকে ভূমিদস্যু গফুর ও হেলিমের লোকজন ফয়েজ মিয়ার পরিবারের সদস্যদের নানা ভাবে ভীতি প্রদর্শন করছে। তাদেরকে মারধোর করে ভারতে তাড়িয়ে দেয়ার হুমকি দেয় ভূমি দস্যুরা। গভীর রাতে ঘরের চাল ও বেড়ায় ঢিল নিক্ষেপসহ দরজা ধাক্কাধাক্কি করে আতংক সৃষ্টি করছে।
এসব ঘটনার পর থেকে প্রতিবন্ধি ফয়েজ মিয়াসহ পরিবারটি চরম আতংকে রয়েছে। ইউনিয়ন আ’লীগের সভাপতি দুলাল খান জানান, ফয়েজ মিয়া ও তার পরিবার নিরীহ প্রকৃতির। গফুর ও হেলিমকে ঘর নির্মানে নিষেধ করেছিলাম। সুহিলপুর ইউপি চেয়ারম্যান আঙ্গুর হাজারী ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, খোঁজ খবর নিবো। তদন্তকারী কর্মকর্তা ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর থানার এসআই মিজানুর রহমান জানান, ঘটনাস্থলে অর্ধ নির্মানাধীন ঘর পেয়েছি। বিষয়টি তদন্তাধিন।