বৃহষ্পতিবার ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের লোকনাথ দিঘীর টেংকেরপাড়ে লোকনাথ রায় চৌধুরী ময়দানে অবৈধ স্থাপনা ও ময়লা ভাগাড় অপসারনের দাবীতে মানববন্ধন, বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। সকাল সাড়ে ৭টার দিকে ভোরের সাথী সংগঠন এর আয়োজন করে। এসময় সকালে চত্বরে হাটতে আসা বিভিন্ন শ্রেণীর পেশা মানুষ প্রাতঃ ভ্রমন বন্ধ করে অংশ নেয়। চত্বরে আয়োজিত প্রতিবাদ সমাবেশে সংগঠনের সাধারন সম্পাদক আবদুল্লাহ ভূইয়ার সভাপতিত্বে ও সাহিত্য একাডেমীর আবৃত্তি শিল্পী সোহেল আহাদের সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেসক্লাবের সভাপতি রিয়াজ উদ্দিন জামি, সমাজ সেবক দেওয়ান মারুফ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেড ক্রিসেন্ট ইউনিটের সাবেক সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট এমদাদুল হক চৌধুরী, টেংকেরপাড় জামে মসজিদের সাবেক সাধারণ সম্পাদক এস. এম. নাছের বাহার, নদী ও পরিবেশ সুরক্ষা সামাজিক সংগঠনের সভাপতি শামীম আহমেদ, লেখক সুভাষ রঞ্জন রায়, ব্যবসায়ী খাজা মাঈনুদ্দিন, আল মামুন সরকার প্রমুখ।
পরে একটি বিক্ষোভ মিছিল শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেসক্লাবের সামনে এসে শেষ হয়। এদিকে দুপুর ১২টায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ (সদর) আসনের সংসদ সদস্য এবং বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি র. আ. ম. উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী, জেলা প্রশাসন, ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌর সভার প্রকৌশলীরা সরজমিনে লোকনাথ দিঘীর পাড় পরিদর্শন করেন।
উল্লেখ্য, গত বুধবার ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের লোকনাথ টেংকের পাড় মাঠের অভ্যন্তরে করোনার টিকা কেন্দ্র নির্মাণের জন্য মাটি খোড়ার কাজ শুরু হয়। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সমালোচনার ঝড় তুলেছেন।
বিক্ষুদ্ধ স্থানীয়রা জানান, শহরে এমনিতে দিনের পর দিন খেলার মাঠ হারিয়ে যাচ্ছে। হাতে গোনা কয়েকটি মাঠ রয়েছে। তার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে দানবীর লোকনাথ রায় চৌধুরী টেংকের পাড় মাঠ। এমনিতেই মাঠের ভেতরে বিভিন্ন স্থাপনা নির্মানের ফলে খেলার মাঠটি সংকুচিত হয়ে আসছে। তারমধ্যে আবার মাঠ দখল করে স্থাপনা নির্মাণ করার ঘটনায় ক্ষুদ্ধ হয়ে সাধারন মানুষ। টিকা কেন্দ্র স্থাপিত হলে প্রচুর লোক সমাগম হবে। এতে খেলাধুলার পরিবেশ থাকবে না। মাঠকে ঘিরে রয়েছে টেংকের পাড় জামে মসজিদ, একটি মেয়েদের স্কুল, ৩টি ছেলেদের স্কুল, ২টি কমিউনিটি সেন্টারসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান। মাঠটি পৌরসভার নিয়ন্ত্রাধীন। মাঠটি শহরের কেন্দ্রস্থলে হওয়ায় এখানে প্রতিদিনই বিনোদনের জন্য বিপুল সংখ্যাক মানুষের আগমন ঘটে।
স্থানীয়রা জানান, পৌরসভার আরো অনেক খালি জায়গা রয়েছে। অন্য কোথাও টিকা কেন্দ্রটি স্থাপনের করা হোক। কোন স্থাপনা নির্মাণ করা হলে আন্দেলন গড়ে তোলা হবে। জেলা নাগরিক কমিটির সভাপতি ডা. বজলুর রহমান বলেন, সম্মিলিত আলোচনার মাধ্যমে বিষয়টি সমাধান করা হবে বলে আশা করছি। ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌরসভার মেয়র নায়ার কবির বলেন, টিকা কেন্দ্রটি অন্যত্র সরিয়ে নেওয়ার বিষয়ে ভাবছি। জেলা প্রশাসক মো. শাহগীর আলম বলেন, এই টিকা কেন্দ্রটি সাময়িক সময়ের জন্য স্থাপন করা হচ্ছে।