নিউজ ডেস্ক,
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুরে নিখোঁজে ৫ দিন পর অরণ মিয়া (৭০) নমে এক বৃদ্ধের ১১ টুকরা লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে নিহত স্ত্রী ও মেয়েকে আটক করেছে পুলিশ।
পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, উপজেলা ফরদাবাদ ইউনিয়নের ফরদাবাদ গ্রামের মধ্যপাড়ার অরুণ মিয়া প্রায় ৩৫ বছর আগে প্রথম স্ত্রীর মৃত্যুর পর একই গ্রামে তারু মিয়ার মেয়ে মোমেনা বেগমকে বিয়ে করেন। বিয়ের পর থেকে দাম্পত্য কলহ লেগেই থাকতো। অরুণ মিয়ার প্রথম স্ত্রীর ঘরে লুৎফুর রহমান রুবেল নামে এক ছেলে রয়েছে। দ্বিতীয় স্ত্রীর দুই ছেলে ও এক কন্যা ছিল। এদের মধ্যে এক ছেলে দুবাই কর্মরত অবস্থায় মারা যান। ২০১৭ সাল থেকে অরুণ মিয়া ছেলে লুৎফর রহমান রুবেলের সঙ্গে গাজীপুরে বসবাস করে আসছিলেন। কয়েক মাস আগে এলাকাবাসী সালিশের মাধ্যমে দ্বিতীয় স্ত্রীর সঙ্গে বনিবনা করে দেন। এরপর থেকে অরুণ মিয়া বেশিরভাগ সময় গ্রামের বাড়িতে থাকতেন।
গত শুক্রবার বিকেল থেকে অরুণ মিয়া নিখোঁজ হন। তার ছেলে লুৎফর রহমান রুবেল সোমবার বাঞ্ছারামপুর মডেল থানায় একটি নিখোঁজ ডায়েরি করেন। মঙ্গলবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে অরুণ মিয়ার পাশের বাড়ির সৌদি প্রবাসী মনির হোসেনের সেফটিক ট্যাংক থেকে দুর্গন্ধ বের হতে দেখে সন্দেহ হয় এলাকাবাসীর। টর্চ লাইট দিয়ে ট্যাংকের ভেতরে দেখে পলিথিন মোড়ানো কয়েকটি বস্তু দেখতে পায় তারা। বিষয়টি জানিয়ে থানায় খবর দিলে পুলিশ এসে রাত ১০টার দিকে ইট দিয়ে মোড়ানো ৯টি পলিথিনের প্যাকেট উদ্ধার করে। সেগুলো খুললে বাবার লাশ সনাক্ত করে তার ছেলে।
নিহতের স্ত্রী মোমেনা বেগম প্রাথমিকভাবে পুলিশের কাছে হত্যাকান্ডের কথা স্বীকার করেছেন।
তিনি জানান,গত শুক্রবার বিকেলে কলহের একপর্যায়ে শাবল দিয়ে মাথায় আঘাত করলে অরুণ মিয়া মাটিতে লুটিয়ে পড়ে। পরে লাশ নিজেই নয় টুকরো করে পলিথিনে পেচিয়ে ইট মুড়িয়ে পাশের বাড়ির মনিরের সেফটিক ট্যাংকে ফেলে দেয়।
বাঞ্ছারামপুর মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) সুজন কুমার পাল জানান, অরুণ মিয়া নিহতের ঘটনায় তার দ্বিতীয় স্ত্রী মোমেনা বেগম, তার ছেলে রাসেল ও মেয়ে লাকীকে আটক করা হয়েছে। এই ঘটনায় জেলা পুলিশ সুপার কার্যলয়ে একটি প্রেস বিফিং করে বিস্তারিত বিয়টি জানানো হবে।