নিউজ ডেস্ক,
আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ফের আলোচনায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া- ২ (সরাইল-আশুগঞ্জ) আসন। এ আসনে আবারো লড়তে দেখা যাবে জামাতা ও শ্বশুরকে। এছাড়াও এ আসনে রয়েছে শক্তিশালী স্বতন্ত্র প্রার্থীও। সব মিলয়ে এ আসনটিতে ত্রিমুখী লড়াই হবে৷
এ আসনটি জাতীয় পার্টিকে ছাড় দিয়েছে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ। ফলে এখানে আওয়ামী লীগের দলীয় প্রার্থী নেই। তবে আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র প্রার্থীসহ সাতজন প্রার্থী আছেন এ আসনে। এর মধ্যে জাপার প্রার্থী রেজাউল ইসলাম ভূঞা ও তাঁর শ্বশুর স্বতন্ত্র প্রার্থী জিয়াউল হক মৃধার (ঈগল) নির্বাচনী প্রতিদ্বন্দ্বিতার বিষয়টি নজর কাড়ছে। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও তাঁরা আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে ছিলেন।
এ আসনের প্রার্থীরা হলেনঃ স্বতন্ত্র প্রার্থী কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাবেক জ্যেষ্ঠ সহ-সভাপতি ও জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোঃ মঈন উদ্দিন (কলার ছড়ি), জাতীয় পার্টির প্রার্থী দলটির অতিরিক্ত মহাসচিব ও প্রেসিডিয়াম সদস্য রেজাউল ইসলাম ভূঞা, তাঁর শ্বশুর জাপার দু’বারের সাবেক সংসদ সদস্য ও জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির (রওশন) সহ-সভাপতি জিয়াউল হক মৃধা (ঈগল প্রতীক), সাবেক সংসদ সদস্য প্রয়াত মুফতি ফজলুল হক আমিনীর ছেলে ইসলামী ঐক্যজোটের চেয়ারম্যান মোঃ আবুল হাসানাত আমিনী ও বিএনপির দলছুট সদ্য সাবেক সংসদ সদস্য প্রয়াত উকিল আব্দুস সাত্তার ভূঁইয়ার ছেলে তৃণমূল বিএনপির মাইনুল হাসান, বাংলাদেশ তরীকত ফেডারেশনের ছৈয়দ জাফরুল কুদ্দুছ ও ন্যাশনাল পিপলস পার্টির রাজ্জাক হোসেন। সমঝোতার কারণে আওয়ামী লীগের প্রার্থী বর্তমান সংসদ সদস্য শাহজাহান আলম সাজুকে সরে দাঁড়াতে হয়েছে।
এদিকে নেতাকর্মীরা বলছেন, রেজাউল ইসলাম ভূঞা ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার কোড্ডা গ্রামের বাসিন্দা। তবে তিনি ব্রাহ্মণবাড়িয়-২ আসনে জোট প্রার্থী। একই আসনে তাঁর শ্বশুর সাবেক সংসদ সদস্য জিয়াউল হক মৃধা স্বতন্ত্র প্রার্থী। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও জামাই-শ্বশুরের দ্বন্দ্ব ছিল আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে। তখন তাঁরা একে অপরের সঙ্গে প্রকাশ্যে বিরোধে জড়ান। রেজাউল তখন মহাজোটের প্রার্থী ছিলেন। সে সময় ভোটের দু’দিন আগে নির্বাচন থেকে সরে দাড়িয়েছিলেন রেজাউল। তবে শ্বশুর জিয়াউল হক মৃধা সিংহ প্রতীক নিয়ে শেষ পর্যন্ত স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মাঠে ছিলেন। তবে পরাজয় বরণ করতে হয়েছিলো তাকে।
গত ৫ নভেম্বরের উপনির্বাচনে ও জিয়াউল হক মৃধা অংশ নিয়েছিলেন। ফলাফলে প্রতিদ্বন্দ্বিতা গড়ে তুললেও আওয়ামীলীগ প্রার্থী শাহজাহন আলম সাজুর কাছে পরাজিত হয়েছিলেন।
এদিকে, ২০১৮ সালে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থী সাবেক সংসদ সদস্য প্রয়াত উকিল আব্দুস সাত্তার ভূঁইয়ার সাথে বর্তমানে আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র প্রার্থী মোঃ মঈন উদ্দিনের প্রতিদ্বন্দ্বিতা হয়। নির্বাচনে আব্দুস সাত্তার ভূঁইয়া বিএনপির প্রার্থী হয়ে ৮৩ হাজার ৯৯৭ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছিলেন। তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বি প্রার্থী মোঃ মঈন উদ্দিন পেয়েছিলেন ৭৫ হাজার ৪১৯ ভোট। ওই নির্বাচনে জিয়াউল হক মৃধা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে সিংহ প্রতীকে ৩৯ হাজার ভোট পেয়ে তৃতীয় হন। কোনো কোনো নেতা-কর্মীর ভাষ্য, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ফলাফল ও জনপ্রিয়তার কারণে সবার চেয়ে এগিয়ে রয়েছেন মঈন উদ্দিন।
রেজাউল ইসলাম ভূঞা বলেন, ‘ক্ষমতাসীন দল সারা দেশে ২৬টি আসন জাতীয় পার্টিকে ছাড় দিয়েছে, যার একটি ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসন। আশা করি, আওয়ামী লীগের সভাপতির আদেশ এখানে পালিত হবে। আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা তাঁকে হতাশ করবেন না।’ এছাড়া শ্বশুড়ের সাথে প্রতিদ্বন্দ্বিতার বিষয়ে তিনি বলেন, রাজনীতি একদিকে আর পারিবারিক বিষয় একদিকে। এ বিষয়ে কোন কথা বলবো না।
জাপার সাবেক সংসদ সদস্য জিয়াউল হক মৃধা বলেন, ‘কে নির্বাচন করল, সেটা দেখার বিষয় নয়। আমি এ জনপদে দুবার সংসদ সদস্য ছিলাম। আমার অসমাপ্ত কাজ সমাপ্ত করতে নির্বাচন করব।’
স্বতন্ত্র প্রার্থী মোঃ মঈন উদ্দিন বলেন, নির্বাচন নিয়ে আমি আশাবাদী। এর আগেও ২০১৮ সালের নির্বাচনে আমি স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে অল্প ভোটের ব্যবধানে হেরে ছিলাম। আমার প্রতি জনগণের ভালবাসা আছে। সেই ভালবাসা নিয়ে আমি এগিয়ে যাবো৷