Advertisement

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কামারপল্লীতে নেই ঈদুল আযহার আমেজ

NewsBrahmanbaria

এই আর্টিকেল টি ২৭৩।

নিউজ ডেস্ক,

ঈদুল আযহার আর মাত্র কয়েকদিন বাকী। বিদেশী দা, ছুরির হাঁকডাকে দেশীয় তৈরী পণ্যের চাহিদা কমায় ভাল নেই ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কামার শিল্পের সাথে জাড়িতরা। ঈদুল আযহাকে সামনে রেখে এক সময় টুং টাং শব্দে কামারপল্লী মুখরিত থাকলেও এবারের চিত্র ভিন্ন। এ শিল্পের সাথে জড়িতরা জানিয়েছেন, চাহিদা না থাকায় কমেছে তাদের ব্যস্ততা। তবে যেটুকু উৎপাদন করা হচ্ছে তারও বাড়তি খরচ গুনতে হচ্ছে। দা, ছুরি, খান্ডসহ প্রয়োজনীয় সামগ্রী তৈরীর উপকরণের দাম বেড়েছে দ্বিগুণ। এতে বিদেশী পণ্যের সাথে পাল্লা দিয়ে বাজারে টিকে থাকতে তাদের হিমশিম খেতে হচ্ছে।

এক সময় বৃহৎ এ ধর্মীয় উৎসবকে সামনে রেখে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কামারপল্লীতে দিন-রাত দা, ছুরি, বটি, খান্ডাসহ কোরবানির সামগ্রী তৈরীতে ব্যস্ততা থাকত। তবে এবার অনেকটাই অলস সময় কাটছে কামারদের। এতে জেলার বিভিন্ন স্থানের কামারপল্লী যেন হারিয়েছে তাদের চিরচেনা রুপ। ঢাকা, চট্রগ্রাম, নরসিংদী, ভৈরবসহ দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে পাইকাররা কোরবানির সামগ্রী ক্রয়ের জন্য এখানে আসত। সারা বছরের ক্ষতি এ সময়ে কিছুটা হলেও পুষিয়ে নিত তারা। তবে এবার শুধুমাত্র দা, বটি, খান্ডা সান দেওয়া ছাড়া নতুন সামগ্রী তৈরীর চাহিদা অনেকটা কমে গেছে।

কর্মকাররা জানান, কোরবানির সামগ্রী তৈরীর কাঁচা মালসহ লোহা কয়লা ও রেতের দাম বেড়েছে। প্রতি কেজিতে লোহার দাম ৪০ টাকা বেড়ে ১শ থেকে ১৩০ টাকা, প্রতি টিন কয়লা ৪০/৫০ টাকা থেকে বেড়ে ১০০/২০০ টাকায় দাঁড়িয়েছে। এতে উৎপদন খরচ বাড়লেও কমেছে লাভের পরিমান। তেমন চাহিদা না থাকায় বানানো পন্য তারা সীমিত লাভে বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছে। এখানে ১শ টাকা থেকে শুরু করে প্রায় হাজার টাকার বিভিন্ন কোরবাণির সামগ্রী রয়েছে।

কামারপল্লীর কারিগর দুলাল কর্মকার জানান, আগে এই কর্মের অনেক কদর ছিল। ঈদ এলে আমাদের কাজের অনেক ব্যস্ততা বেড়ে যেত। আমরা আনন্দের সাথে দিনরাত কোরবানির বিভিন্ন সামগ্রী তৈরি করতাম। এখন আর কামার পল্লিতে তেমন কাজ নেই। বাপ-দাদার কর্ম হিসাবে এই পেশাকে এখনো আকরে রেখেছি। এখন আর এই কর্ম দিয়ে জীবন চলে না। অনেক কষ্টে জীবন জাপন করছি।

আরেক প্রবীন কারিগর গৌরপদ কর্মকার জানান, কোরবানির সামগ্রীর কাজকর্ম এখন আর আগের মত নেই। আগের নেওয়া অর্ডারের টুক টাক কাজ এখনো করছি। নতুন কোন অর্ডার পাইনি। বর্তমানের লোহা ও কয়লার দাম বেড়ে যাওয়ায় লাভের পরিমান অনেকাংশে কমে গেছে। এই শিল্পটির দুর্দিন থাকায় আমাদের বংশের নতুন প্রজন্মও এই শিল্প থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে। সরকার যদি আমাদের কামারদের প্রতি নজর রাখে তাহলে আমরা এই পেশাকে টিকিয়ে রাখতে পারব।

উল্লেখ্য, জেলায় প্রায় দেড় থেকে ২ হাজার কামার পরিবার এখনো তাদের পৈত্রিক পেশা আকড়ে ধরে আছে।

Advertisement

Sorry, no post hare.

Social Media Auto Publish Powered By : XYZScripts.com