Advertisement

বিজয়নগরে লটকনের বাম্পার ফলন

NewsBrahmanbaria

এই আর্টিকেল টি ২৮৭।

নিউজ ডেস্ক,

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগরে এ বছর লটকনের বাম্পার ফলন হয়েছে। গত দুই বছর যাবত বিজয়নগরে লটকন চাষ হলেও এ বছর বাণিজ্যিকভাবে লটকন চাষ করা হয়েছে। ইতিমধ্যে এই লকটন বিক্রিও শুরু হয়েছে। বাজারে তিন ধরনের লটকন বিক্রি হচ্ছে। বাজারের ছোট সাইজের লটকন খচিরা ৮০ টাকা কেজি, মাঝারী সাইজের লটকন খুচরা ১২০ টাকা কেজি ও বড় সাইজের লটকন ১৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

কৃষি সংশ্লিষ্টরা জানায়, চলতি বছর বিজয়নগরে প্রায় ৮০ লাখ টাকার লটকন বিক্রি করার সম্ভাবনা রয়েছে। ফলন ভালো হওয়ায় লটকনের চাষ নিয়ে চাষীদের মধ্যেও আগ্রহ বাড়ছে। বাংলাদেশে লটকন এলাকাভেদে বিভিন্ন নামে পরিচিত। যেমন হাড় ফাটা, ভুবি, বগি, কানাইজুু, লটকা, লটকাউ, লোটকা ইত্যাদি।

উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার ভারতীয় সীমান্তঘেষা উপজেলা বিজয়নগরের টিলা ভূমির লাল মাটি লটকন চাষের জন্য খুবই উপকারি। উপজেলার চম্পকনগর, মেরাশানি, সিঙ্গারবিল ও পাহাড়পুর এলাকায় রয়েছে লটকনের বাগান। চলতি বছর আবহাওয়া অনূকুলে থাকায় এবং কোন ধরনের রোগ বালাই না হওয়ায় এবছর লটকনের বাম্পার ফলন হয়েছে। উপজেলার প্রায় ১৫ হেক্টর জমিতে লটকন চাষ করা হয়েছে। গত ঈদুল আযহার পর থেকেই বাজারে লকটন বিক্রি করা শুরু হয়েছে।

চাষীরা জানান, বিজয়নগরে উৎপাদিত লটকন রসালো, টক ও মিষ্টিতে ভরপুর হওয়ায় বাজারে বিজয়নগরের লটকনের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। এছাড়াও লটকনের রয়েছে পুষ্টি ও ঔষধি গুণ। ভিটামিন “সি” তে ভরপুর এ ফল, যা প্রতিদিনের খাবারের তালিকায় রাখা যায়। লটকন পরিপক্ক হওয়ার পর থেকে প্রতিদিন পাইকাররা এসে বাগান থেকেই লটকন কিনে নিয়ে যাচ্ছেন। প্রতিদিন সকালে জেলার বিভিন্ন উপজেলা, কিশোরগঞ্জ জেলার ভৈরব উপজেলা এবং কুমিল্লা ও হবিগঞ্জ জেলা থেকে পাইকাররা বাগানে এসে লটকন কিনে নিয়ে যাচ্ছেন।

এ ব্যাপারে মেরাশানী গ্রামের লটকন চাষী বীর মুক্তিযোদ্ধা আনোয়ার হোসেন বলেন, গত ৭/৮ বছর আগে তিনি ময়মনসিংহ জেলা থেকে ১০০ লটকনের চারা এনে একটি বাগান করি। যখন প্রথমে লকটকের বাগান করি এলাকার অনেকেই এনিয়ে হাসি-ঠাট্টা করতো। গত ২ বছর ধরে কিছু কিছু গাছে লটকন ধরা শুরু করলেও এবছর সব গাছে লটকন ধরেছে। কৃষি অফিসের লোকজন সব সময় আমাকে পরামর্শ দিচ্ছেন। বাগান থেকে লক্ষাধিক টাকার উপর লটকন বিক্রি করতে পারবো বলে আশা করি। তবে সরকারিভাবে  সহযোগিতা পেলে বানিজ্যিকভাবে আমি লটকনের চাষ করবো।

উপজেলার সিঙ্গারবিল গ্রামের লটকন বাগানের মালিক জাকির মিয়া বলেন, এ বছর লটকনের বাম্পার ফলন হয়েছে। প্রতিদিন দূর-দুরান্ত থেকে পাইকারা এসে বাগান থেকেই লটকন কিনে নিয়ে যাচ্ছেন। এ বাগান থেকে  ২ লাখ টাকার লটকন বিক্রি করতে পারবেন বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।

এ ব্যাপারে উপজেলা কৃষি অফিসার মোঃ শাব্বির আহমেদ বলেন, বিজয়নগরের মাটি লটকন চাষের জন্য খুবই উপকারি। এ বছর বাণিজ্যিকভাবে উপজেলায় লকটন চাষ করা হয়েছে। উপজেলার ২০/২৫ জন চাষী ১৫ হেক্টর জমিতে লটকনের বাগান করেছেন। উপজেলা কৃষি অফিসের পক্ষ থেকে বাগান মালিকদের সব ধরনের পরামর্শ ও সহযোগীতা দেয়া হচ্ছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এ বছর উপজেলায় লটকনের বাম্পার ফলন হয়েছে। আশাকরি এ বছর উপজেলায় প্রায় ৮০ লাখ টাকার লটকন বিক্রি করতে পারবেন চাষীরা।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) এ.এইচ. ইরফান উদ্দিন আহমেদ বলেন, সরকারিভাবে লটকন চাষীদের সার সহ বিভিন্ন কৃষি উপকরণ দেয়া হয়েছে। চাষীদেরকে বিভিন্ন ধরনের প্রশিক্ষণ দিয়ে দক্ষ করে গড়ে তোলা হচ্ছে।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর প্রশিক্ষণ অফিসার মুন্সী তোফায়েল হোসেন বলেন, চলতি বছর বিজয়নগর উপজেলায় ১৫ হেক্টর জমিতে লটকনের চাষ করা হয়েছে। বাম্পার ফলন ও হয়েছে। ইতিমধ্যেই লকটন বিক্রিও শুরু হয়েছে। আশা করি চলতি বছর বিজয়নগরে প্রায় ৮০ লাখ টাকার লটকন বিক্রি করা হবে। ফলন ভালো হওয়ায় লটকনের চাষ নিয়ে চাষীদের মধ্যেও আগ্রহ বাড়ছে।

তিনি আরও বলেন, লটকনের রয়েছে পুষ্টি ও ঔষধি গুণ। ভিটামিন “সি” তে ভরপুর এই ফল, যা প্রতিদিনের খাবারের তালিকায় রাখা যায়। ১০০ গ্রাম পাকা লটকনে আছে খাদ্যশক্তি ৯১ কিলোক্যালোরি। এছাড়াও আমিষ ১.৪২ গ্রাম, চর্বি ০.৪৫ গ্রাম, ভিটামিন-সি ৫৫ মিলিগ্রাম।

Advertisement

Sorry, no post hare.

Social Media Auto Publish Powered By : XYZScripts.com