আখাউড়া প্রতিনিধি:
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া মিনি কক্সবাজার, শাহপীর কল্লাহ শহীদ মাজার, কসবা কোল্লা পাথরের পর এবার দর্শনার্থীদের কাছে নতুন করে আকর্ষণীয় হয়ে উঠেছে আখাউড়া উপজেলার মোগড়া ইউনিয়নের আদমপুর গ্রামের সূর্যমুখী বাগান।
এ বাগানে এসে অনেকেই নিজে,বন্ধু-বান্ধব ও পরিবার সহ ছবি তুলে ফেসবুকে পোস্ট দেওয়ার ফলে বাগানের ছবিতে এখন ফেসবুক ভাইরাল। এইসব পোস্ট দেখে সৌন্দর্য প্রেমী ও দর্শনার্থীগনের মাঝে বাগানটি দেখার আগ্রহী লোক বাড়ছে। একজন অন্যজনের কাছ থেকে খবর নিয়ে অনেকেই আসছেন সূর্যমুখীর অপরূপ সৌন্দর্য উপভোগ করতে।
আর এই সুন্দর্য উপভোগ করতে হলে যেতে হবে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আখাউড়া উপজেলার মোগড়া ইউনিয়নের আদমপুর গ্রামে। আর এই সুন্দর্য উপভোগ করা যাবে চলতি বছরের ১৫মার্চ পর্যন্ত। এরপর বাগানের সৌন্দর্য ধীরে ধীরে কমতে শুরু করবে।
জানা যায়, উপজেলা কৃষি অফিসের প্রণোদনায় বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যেই প্রায় ১৫ বিঘা জমিতে সূর্যমুখীর আবাদ করেন আখাউড়া দক্ষিণ ইউনিয়নের সাতপাড়া গ্রামের তামজিদ খান। তার এই সূর্যমুখী বাগানকে ঘিরেই এবছর হঠাৎ করে প্রসিদ্ধ হয়ে উঠেছে এ এলাকা।
চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে প্রায় প্রতিটি গাছে ফুল ফুটেছে। একসাথে প্রতিটি চারায় ফুল ফুটায় পুরো জমি জুড়ে তৈরি হয়েছে অভাবনীয় এক মনজোড়ানো সৌন্দর্য। সকালে সূর্যের দিকে মুখ করে ফুটে থাকা ঘন ফুলের সমারোহ বিকালে সূর্যাস্ত পর্যন্ত আকর্ষণ সৌন্দর্য প্রকৃতি প্রেমী ও সৌন্দর্যপ্রেমীদের টেনে আনছে। এসে এখানে কেউ ছবি তুলছেন, কেউ সেলফি তুলছেন আবার অনেকেই ঘুরে বেড়াচ্ছেন। ফলে সারা দিনই ভিড় থাকে নারী পুরুষ ও তরুণ তরুণীদের।
সূর্যমুখীর অপরূপ সৌন্দর্য উপভোগ করতে ছুটির দিন সহ প্রায় প্রতিদিনই বিপুল পরিমাণ দর্শনার্থীর সমাগম ঘটে বাগানে। এই মৌসুমী ফুল নিরব এলাকাটিকে করেছে মানুষের মিলন মেলা।
আব্দুল্লাহ্পুর থেকে আসা দর্শনার্থী তোফায়েল আহমেদ বলেন, হাজারো ফুলের সমারোহে মুগ্ধ আমরা। ফুলের সৌন্দর্য্যে কিছু সময় আনন্দে থাকা যায়। সূর্যমুখী বাগানে আসলে অন্য রকম যা কোথাও আমি পাই নি। তাই আমি আরও এ বাগানে এসেছি। আবারো আসান ইচ্ছা আছে বন্ধুদের নিয়ে।
বেড়াতে আসা নাজমুল ইসলাম, রুবেল সহ অনেকেই জানান, আখাউড়া শহরের অদুরে সূর্যমুখি বাগানটি খুবই সুন্দর। প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্য উপভোগ করা মানুষের স্বভাবগত বৈশিষ্ট। হলুদবর্ণের ফুল আমাদের কাছে টেনে নিয়েছে। স্মৃতি ধরে রাখতে সূর্যমুখির সংস্পর্শে গিয়ে কিছু ছবি উঠেছি। ভাল লেগেছে আমাদের।
বাগানের মালিক কৃষক তামজিদ খাঁন জানান, প্রায় ১৫ বিঘা জমি ইজারা নিয়ে আখাউড়া কৃষি অফিসের সহযোগিতায় আমি সূর্যমূখী বাগান করার উদ্যোগ নেয়, আর পাশে ২বিঘা জমিতে গম চাষ করারও উদ্যোগ নেই, আমি আশা করছি এই বাগান থেকে আমি লাভবান হব, তাছাড়া বাগানের কথা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হওয়াতে আশপাশ সহ দূর দুরান্ত থেকে যেভাবে দর্শনার্থীরা আসছেন তাতে আমি এসব সামলাতে খুবই হিমশিম খাচ্ছি, দর্শনার্থীদের অনেকেই লুকিয়ে ফুল ছিড়ে ফেলে যা দেখে মনে খুবই কষ্ট পায়, আমি দর্শনার্থীদের অনুরোধ করবো কেউ যেন আমার এইবাগানের সৌন্দর্য উপভোগ করতে এসে ফুল না ছিড়েন,
তিনি আরো জানান ১৫ মার্চের মধ্যে ফুলগুলো বীজ সংগ্রহের উপযোগী হয়ে উঠবে। তখন সূর্যমুখী গাছ কেটে বীজ সংগ্রহ করা হবে। হঠাৎ করে গজিয়ে উঠা এই হলুদের শোভা ১৫ মার্চের পর আদমপুরের সূর্যমুখি হলুদ বাগানটি আর থাকবে না।
পূর্বের মতোই সাদামাটা একখন্ড জমিতে পরিনত হয়ে যাবে। তিনি আরও জানান, বেড়াতে আসা লোকজন বাগানের ভিতর ঢুকে ছবি তুলেতে গিয়ে গাছগুলো মাড়িয়ে নষ্ট করে দিচ্ছেন।অনেকে আবার ফুল ছিড়ে নেয়। এতে তার ফলন কমে যাওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। ক্ষতির আশঙ্কায় মানুষের এই সমাগম মেনে নিতে পারছেন না।