Advertisement

গ্রাম-বাংলার ঐতিহ্যবাহী নৌকা বাইচ

NewsBrahmanbaria

এই আর্টিকেল টি ৪৬০।

 

স্টাফ রিপোর্টার:

ঢেউয়ের কলতান, হেইয়োরে হেইয়ো আর সারিবদ্ধ বৈঠার ছলাত ছলাত শব্দে উত্তাল ব্রাহ্মণবাড়িয়ার তিতাস নদী। আর দু’পাড়ের হাজারো দর্শকের করতালিতে উৎসব মুখর পরিবেশ। ভাদ্রের প্রচন্ড রোদ উপেক্ষা করে গ্রাম-বাংলার ঐতিহ্যবাহী নৌকা বাইচ উপভোগ করেন তিতাসপাড়ে অর্ধ লক্ষাধিক মানুষ।

আবহমান বাংলার ঐতিহ্য ধরে রাখতে করোনার প্রাদুর্ভাস কমে আসার ২ বছর পর এবার ব্রাহ্মণবাড়িয়ার তিতাস নদীতে অনুষ্ঠিত হয়েছে ‘নৌকা বাইচ’ প্রতিযোগিতা। রবিবার বিকেলে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা প্রশাসন এ নৌকা বাইচ প্রতিযোগিতার আয়োজন করে।

নৌকা বাইচে সহযোগীতায় ছিলেন দারাজ বাংলাদেশ, বাংলাদেশ গ্যাস ফিল্ড কোম্পানী লিমিটেড, ইউনিভার্সেল মেডিকেল সার্ভিস লিমিটেড। করোনা মহামারি পরিস্থিতির জন্য বিগত দুই বছর এ প্রতিযোগিতার আয়োজন করা সম্ভব হয়নি। তাই এবারের ঐতিহ্যবাহী নৌকা বাইচ প্রতিযোগিতা চলাকালে তিতাসের বুকভরা ঢেউ আর সুকুমার বিনোদন পিপাসু দর্শকদের প্রাণভরা উচ্ছাস যেন একাকার হয়ে উঠে। তিতাস নদীর ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌর এলাকার শিমরাইল কান্দি গাঁওগ্রাম পয়েন্ট থেকে প্রতিযোগিতা শুরু হয়ে পৌর এলাকার মেড্ডা সরকারি শিশু পরিবার পর্যন্ত (প্রায় দেড় কিলোমিটার) গিয়ে প্রতিযোগিতা শেষ হয়।

নৌকা বাইচে ব্রাহ্মণবাড়িয়া, হবিগঞ্জ ও কিশোরগঞ্জ জেলার ১৩টি নৌকা প্রতিযোগিতায় অংশ নেই। এরমধ্যে ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও হবিগঞ্জের ছয়টি করে এবং কিশোরগঞ্জের একটি নৌকা রয়েছে। প্রথম চারটি ধাপে ১৩টি নৌকা প্রতিযোগীতায় অংশ নেয়। প্রত্যেকটি ধাপ থেকে একটি করে বিজয়ীসহ চারটি নৌকা চুড়ান্ত প্রতিযোীগতায় অংশ নেয়।

বিকেল আড়াইটায় তিতাসের শিমরাইলকান্দি গাঁওগ্রাম পয়েন্টে বেলুন উড়িয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে নৌকা বাইচ প্রতিযোগিতার উদ্বোধন করেন বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিক সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি র. আ. ম. উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী এমপি।

উদ্বোধনের পর রং বে-রঙের বাহারি পোশাক পরিহিত প্রতিযোগি নৌকা বাইচের মাঝিদল তাদের সুসজ্জিত নৌকা নিয়ে প্রতিযোগিতায় অংশ নেয়। এসময় বাদ্যযন্ত্রের তালে তালে মাঝিদের ভাটিয়ালী গান আর পানিতে বৈঠার ছলাত ছলাত শব্দে পুরো এলাকা মুখরিত হয়। দু’পাড়ের দর্শনার্থীরাও স্বত:স্ফুর্ত আবেগে সুর মেলায় মাঝিদের সাথে-‘মারো টান, হেইয়ারে হেইয়াহো’।

এদিকে, উৎসবমুখর পরিবেশে এ নৌকা বাইচ উপভোগ করতে তিতাসের দুই তীরে প্রায় অর্ধ লক্ষাধিক দর্শনার্থী জড়ো হন। তারা তীরবর্তী ভবনের ছাদ, বিভিন্ন ঘাট এবং নৌযানের ওপর বসে প্রতিযোগিতা উপভোগ করেন। আবার কেউ কেউ নৌকা ভাড়া নিয়ে পরিবার পরিজন, বন্ধু-বান্ধবকে সাথে নিয়ে নৌকা বাইচ উপভোগ করে। এ সময় বাইচ নির্বিঘœ করতে নদীতে জেলা পুলিশ ও নৌ পুলিশসহ আইনশৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা টহল দেয়। প্রতিযোগিতা শেষে বিকেলে মেড্ডা সরকারি শিশু পরিবার পয়েন্টে পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠিত হয়।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা প্রশাসক মোঃ শাহগীর আলমের সভাপতিত্বে এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে বিজয়ীদের মাঝে পুরষ্কার বিতরণ করেন, স্থানীয় সংসদ সদস্য, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিক সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী। প্রতিযোগিতার উদ্বোধনী ও পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি থাকবেন পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আনিসুর রহমান, ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌর মেয়র মিসেস নায়ার কবির ও জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক আল-মামুন সরকার, ব্রাহ্মণবাড়িয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার প্রফেসর ফাহিমা খাতুন প্রমুখ।

প্রতিযোগিতায় প্রথম স্থান অধিকারী নৌকাকে ১ লক্ষ টাকা, দ্বিতীয় অধিকারী নৌকাকে ৬০ হাজার টাকা ও তৃতীয় অধিকারী নৌকাকে ৩০ হাজার টাকা পুরষ্কার প্রদান করা হয়। এছাড়া বাকি অংশগ্রহনকারী প্রত্যেক দলকে ২০ হাজার টাকা করে দেয়া হয়।

Advertisement

Sorry, no post hare.

Social Media Auto Publish Powered By : XYZScripts.com