স্টাফ রিপোর্টার:
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় হেফাজত ইসলামের কর্মী-সমর্থকদের ২৬,২৭ ও ২৮ মার্চ শহর জুড়ে ব্যাপক তান্ডব চালানো ঘটনায় আরো ১২জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। রবিবার রাতে থেকে সোমবার সকাল পর্যন্ত জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে অভিযান চালিয়ে তাদেরকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ নিয়ে ৫৬ মামলায় ৩১০জনকে গ্রেফতার করা হলো।
পুলিশের দাবি গ্রেপ্তারকৃতরা সবাই হেফাজতে ইসলামের কর্মী-সমর্থক। সোমবার দুপুরে জেলা পুলিশের বিশেষ শাখা থেকে গনমাধ্যম কর্মী কাছে পাঠানো প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, হেফাজতের তান্ডবের ঘটনায় জড়িত আরো ১২জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এরা সবাই হেফাজতে ইসলামের কর্মী-সমর্থক। এনিয়ে এসব ঘটনায় মোট ৩১০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, তান্ডবের ঘটনায় জেলার বিভিন্ন থানায় মোট ৫৫টি মামলা দায়ের করা হয়েছে। এর মধ্যে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানায় ৪৯টি, আশুগঞ্জ থানায় ৪টি, সরাইল থানায় ২টি। ৫৬টি মামলায় এজাহারনামীয় ৪১৪ জনসহ অজ্ঞাতনামা ৩৫ হাজার লোককে আসামি করা হয়েছে। জেলা পুলিশের বিশেষ শাখার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ডিআইওয়ান) ইমতিয়াজ আহমেদ বলেন, পুলিশ আসামীদের ভিডিও ফুটেজ ও ছবি দেখে তাদেরকে গ্রেপ্তার করছে।
উল্লেখ্য, স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তির অনুষ্ঠানে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশে আগমনের প্রতিবাদে হেফাজতে ইসলামের নেতা-কর্মীরা গত ২৬ থেকে ২৮ মার্চ পর্যন্ত ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ব্যাপক ধ্বংসাত্মক কার্যকলাপ চালায়। এসময় হামলাকারীরা ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলওয়ে স্টেশন, পৌরসভা কার্যালয়, সুর স¤্রাট দি আলাউদ্দিন সঙ্গীতাঙ্গন, এসিল্যান্ডের কার্যালয়, সুর স¤্রাট আলাউদ্দিন খাঁ পৌর মিলনায়তন, জেলা ক্রীড়া সংস্থার কার্যালয়, পুলিশ সুপারের কার্যালয়, সিভিল সার্জনের কার্যালয়, জেলা মৎস্য অফিস, জেলা পরিষদের ডাক বাংলো, সার্কিট হাউজ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেসক্লাব, জেলা পরিষদ কার্যালয়, মাতৃ সদন, সরকারি গণগ্রন্থাগার, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আল-মামুন সরকারের বাসভবন, জেলা শিল্পকলা একাডেমী, বঙ্গবন্ধু স্কয়ারে স্থাপিত বঙ্গবন্ধুর দুটি ম্যুরালসহ তিনটি ম্যুরাল, শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত ভাষা চত্বরে উন্নয়ন মেলার প্যান্ডেল, একই চত্বরে থাকা শহর সমাজসেবা প্রকল্পের অফিস, মুক্তিযোদ্ধা সংহতি পরিষদের অফিস, সার্কিট হাউজ, হাইওয়ে থানা ভবন, ইউনিভার্সিটি অব ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ক্যাম্পাস, হিন্দু সম্প্রদায়ের ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান দক্ষিণ কালীবাড়ি, জেলা ছাত্রলীগের সভাপতির বাসভবন, জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদকের বাসভবন, আশুগঞ্জ টোলপ্লাজা, সুহিলপুর ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়সহ সরকারি, বেসরকারি প্রায় অর্ধশতাধিক স্থাপনায় হামলা চালিয়ে ভাংচুর ও অগ্নি সংযোগ করে পুরো ব্রাহ্মণবাড়িয়াকে মৃত্যুপুরিতে পরিনত করে।