এনবি ডেস্কঃ
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুর উপজেলায় দাখিল পরীক্ষার্থীদের নৈর্ব্যক্তিক প্রশ্নের উত্তর পরিবর্তন করার সময় হাতে নাতে ধরে আবু নাছের-(৩৬) নামে এক শিক্ষককে দুই বছরের কারাদণ্ড এবং ১০ হাজার টাকা জরিমানা করেছেন ভ্রাম্যমান আদালত।
মঙ্গলবার দুপুরে উপজেলার বাঞ্ছারামপুর সোবহানিয়া ইসলামিয়া ফাযিল (ডিগ্রি) মাদরাসা কেন্দ্রে এঘটনা ঘটে। উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নাফিসা নাজ এই কারাদন্ড দেন।
দন্ড পাওয়া আবু নাছের লক্ষীপুর উপজেলার পূর্ব সৈয়দপুর গ্রামের সামসু উদ্দিন মিয়ার ছেলে । তিনি উপজেলার এই মাদরাসার খন্ডকালীন শিক্ষক। এ ঘটনায় ওই কেন্দ্রের কেন্দ্র সচিবের দায়িত্বে থাকা থাকা বাঞ্ছারামপুর সোবহানিয়া ইসলামিয়া ফাযিল (ডিগ্রি) মাদরসার অধ্যক্ষ মোঃ রুহুল আমিনকে অব্যাহতি দেয়া হয়।
ভ্রাম্যমান আদালত সূত্রে জানা গেছে, মঙ্গলবার উপজেলার বাঞ্ছারামপুর সোবহানিয়া ইসলামিয়া ফাযিল ( ডিগ্রি) মাদরসা কেন্দ্রে দাখিল পরীক্ষার গণিত বিষয়ের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। দুপুরে উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নাফিসা নাজ ওই কেন্দ্রে পরিদর্শনে যান। পরীক্ষা শেষ হওয়ার পর কেন্দ্র সচিবের পাশের কক্ষে মাদরাসার খন্ডকালীন শিক্ষক আবু নাছের গণিত পরীক্ষার নৈর্ব্যক্তিক প্রশ্নের উত্তরপত্র নিজে লিখে শিক্ষার্থীদের জমা দেওয়া উত্তরপত্রগুলো সরিয়ে নতুন নৈর্ব্যক্তিকের ১০ টি উত্তরপত্র জমা দেওয়ার চেষ্টা করেন। সে সময় কেন্দ্র পরিদর্শকের দায়িত্বে থাকা কাজী সোহেল হাতেনাতে আবু নাছের আটক করেন। পরে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) নাফিসা নাজ ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করে অভিযুক্ত শিক্ষককে দুই বছরের কারাদন্ড এবং ১০ হাজার টাকা জরিমানা করেন।
এ ব্যাপারে ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) নাফিসা নাজ বলেন, পরীক্ষা শেষ করে সকল প্রশ্নপত্র তুলে নির্ধারিত কক্ষে নিয়ে যায় দায়িত্বপ্রাপ্ত পরিদর্শক। খন্ডকালীন ওই শিক্ষক আগেই নৈর্ব্যক্তিক প্রশ্নের উত্তরপত্র লিখে তৈরি করে রেখেছিলেন। ওই উত্তরপত্র গুলোতে শিক্ষার্থীদের রুল ও রেজিঃ নম্বর তিনি নিজে লিখে রেখেছিলেন। পরীক্ষা শেষে সুযোগ বুঝে শিক্ষার্থীদের জমা দেওয়া উত্তরপত্রগুলো পরিবর্তন করে নিজের লেখা উত্তরপত্রগুলো রাখার সময় তাকে হাতেনাতে আটক করে আরেক শিক্ষক। তিনি বলেন, আমরা ১০টি উত্তরপত্র পেয়েছি যেগুলোর মধ্যে কক্ষ পরিদর্শকের কোন স্বাক্ষর ছিল না। এ ঘটনায় গঠিত তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন পাওয়ার পর জড়িত অন্য কাউকে পাওয়া গেলে তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোঃ নাসির উদ্দিন সরোয়ার বলেন, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) নাফিসা নাজ সারাদিন ওই কেন্দ্রে দায়িত্বে¡ ছিলেন। পরীক্ষা শেষ করে চলে আসার সময় ওই অভিযুক্ত শিক্ষক এঘটনা ঘটায়। এ ঘটনার তদন্তে তিন সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন পাওয়ার পর পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
###