স্টাফ রিপোর্টার,
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইলে গায়েবি মাজার গুড়িয়ে দিয়েছে পুলিশ। গত শুক্রবার রাতে উপজেলার পানিশ^র ইউনিয়নের শাখাইতি গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। এলাকাবাসী জানান, শাখাইতি গ্রামের প্রবাসী অহেদ মিয়ার স্ত্রী আনিছা বেগম-(৪৭) তার বসত ঘরে গায়েবি মাজার নির্মাণ করেন। ইসমাইল মিয়া নামের এক ব্যক্তিকে পীর সাজিয়ে পরিচালনা করছিলেন কথিত মাজারের কর্মকান্ড। গায়েবি মাজারের প্রচারণায় নামিয়ে দেয়া হয় একাধিক ব্যক্তিকে। গায়েবি মাজারে সেজদা করার কথাও ছড়িয়ে পড়ে চারিদিকে। এমন খবরে গত শুক্রবার রাতে সরাইল থানার পুলিশ কথিত মাজারটি গুড়িয়ে দেন।
পুলিশ ও ইউপি সদস্য সুমন মুন্সি ও স্থানীয়রা জানায়, শাখাইতি গ্রামের প্রয়াত গণি মিয়ার ছেলে অহেদ মিয়া (৫২) দীর্ঘদিন ধরে মধ্যপ্রাচ্যে রয়েছেন। অহেদ মিয়ার স্ত্রী আনিছা বেগমের বাড়ি একই ইউনিয়নের দেওবাড়িয়া গ্রামে। আনিছা বেগম হঠাৎ করে নিজের বসতঘরের ভিতরে গর্ত খুঁড়ে ইটা মাটি দিয়ে কবর নির্মাণ করেন। কবরের উপরে বিছিয়ে দেন একটি গিলাফ। কবরটিকে তিনি অলৌকিক ও গায়েবি মাজার বলে চারিদিকে প্রচার করতে থাকেন। আশুগঞ্জ উপজেলার তাজপুর গ্রামের ইসমাইল মিয়া নামের এক ব্যক্তিকে মাজারের পীর সাজিয়ে বসিয়ে দেয়া হয়। রোমান মিয়া নামের এক ব্যক্তি নিজেকে হুজুর পরিচয় দিয়ে ওই কবরের অলৌকিক ক্ষমতা ও উপকারিতা সম্পর্কে লোকজনকে বুঝাতে থাকেন। কিছু লোক এসে কথিত মাজারে মোমবাতি আগরবাতি জ্বালিয়ে সেজদা করতে থাকে। সেই সাথে জমে ওঠে দান খয়রাত ও মান্নত।
খবর পেরে সরাইল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহাদাত হোসেন শুক্রবার রাতে ওই গ্রামে উপস্থিত হন। টের পেয়ে ওই চক্রের সকলেই পালিয়ে যায়। স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও পুলিশের নেতৃত্বে ওই কবরটি ভেঙ্গে চুরে গুড়িয়ে দেওয়া হয়। রাতেই আনিছা বেগম নিজের প্রতারণার চেষ্টার অপরাধ স্বীকার করে প্রকাশ্যে পুলিশের কাছে ক্ষমা চান।
এ ব্যাপারে সরাইল থানার ওসি শাহাদাত হোসেন বলেন, এ কাজের পেছনে সিন্ডিকেট রয়েছে। ওই নারী কিছু লোকের কুপরামর্শে অনৈতিক পন্থায় অর্থ উপার্জনের লক্ষ্যে ঘরের ভিটায় কবর নির্মাণ করেন। এটাকে পুঁজি করে সহজ-সরল লোকজনকে ধোঁকা দিয়ে অর্থ হাতিয়ে নিতে শুরু করেছিলেন। কথিত মাজার ভেঙ্গে সমান করে দিয়েছি।