Advertisement

আশুগঞ্জে মেঘনার তীর দখল করে অবৈধ জেটি নির্মাণি, ঝুঁকিতে দুটি বিদ্যুৎ কেন্দ্র

NewsBrahmanbaria

এই আর্টিকেল টি ৩৪।

নিউজ ডেস্ক,

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জে মেঘনার তীর ইজারা নিয়ে প্রভাবশালী ব্যক্তি কর্তৃক নদীর প্লাবন ভূমি দখল করে অবৈধভাবে অস্থায়ী ঘাট নির্মান করার অভিযোগ উঠেছে। এই ঘাটে কার্গোজাহাজ থেকে প্রতিদিন শতশত টন খাদ্য পণ্য ক্রেনের মাধ্যমে খালাস করা হচ্ছে। এতে করে ঝুঁকিতে পড়েছে রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন আশুগঞ্জ পাওয়ার ষ্টেশন কোম্পানী লিমিটেডের ৪০০ মেঘাওয়াট ও ২২৫ মেঘাওয়াট ক্ষমতা সম্পন্ন দুটি বিদ্যুৎ কেন্দ্র। এই অবস্থায় ঝুঁকি বিবেচনা করে দ্রুত অবৈধ ঘাটটি অপসারণ করার জন্যে জেলা প্রশাসকের কাছে চিঠি দিয়েছেন, “বিআইডব্লিওটিএ ও আশুগঞ্জ পাওয়ার ষ্টেশন কোম্পানী লিমিটেড কর্তৃপক্ষ। তবে ইজারাদারের দাবি জনস্বার্থে ইজারা শর্তের মধ্যেই তিনি ঘাটটি স্থাপন করেছেন।

বিআইডব্লিওটিএ, আশুগঞ্জ পাওয়ার স্টেশন কোম্পানী লিমিটেড কর্তৃপক্ষ সহ সংশ্লিষ্টরা জানান, ইজারার নাম করে আশুগঞ্জ উপজেলার সোনারামপুর প্রান্তে মেঘনার প্লাবন ভূমি ও তীর দখল করে অবৈধভাবে নির্মান করা হয়েছে জেটি ঘাট। আশুগঞ্জ উপজেলা বয়লার মালিক সমিতির সভাপতি মোঃ শাহজাহান সিরাজ ২০২৪-২০২৫ অর্থ বছরের জন্যে মেঘনার তীর ইজারা নিয়ে ঘাটটি তৈরী করেছেন। এই ঘাটটি নির্মানের ফলে প্রতিদিন শতশত ট্রাক ভারি মালামাল নিয়ে রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন আশুগঞ্জ পাওয়ার ষ্টেশন কোম্পানী লিমিটেডের ৪০০ মেঘাওয়াট পাওয়ার প্ল্যান্ট এবং ২২৫ মেঘাওয়াট পাওয়ার প্ল্যান্টের পাশ দিয়ে যাচ্ছে। এতে করে সড়কের নিচে থাকা পাওয়ার প্ল্যান্টের কোলিং ওয়াটার পাইপ, “র”-ওয়াটার পাইপ, ফায়ার সার্ভিস ওয়াটার পাইপ, খাবার পানির পাইপলাইন ঝুঁকিতে পড়েছে। পাশাপাশি বালি দিয়ে তৈরী সড়কটির ধূলাবালির কারণে প্ল্যান্টের এয়ার ফিল্টার জ্যাম হয়ে যে কোনো সময় বন্ধ হয়ে যেতে পারে পাওয়ার প্ল্যান্টের বিদ্যুৎ উৎপাদন। ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে পাওয়ার প্ল্যান্টের মূল্যবান যন্ত্রপাতি। এ অবস্থায় রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ বিদ্যুৎকেন্দ্র রক্ষার স্বার্থে চলতি মাসের ১ ডিসেম্বর আশুগঞ্জ পাওয়ার ষ্টেশন কোম্পানী লিমিটেডের নির্বাহী পরিচালক মোহাম্মদ আব্দুল মজিদ এক চিঠির মাধ্যমে বিষয়টি ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা প্রশাসককে অবগত করেন। পাশাপাশি ঘাটটি অন্যত্র স্থানান্তরের জন্যে অনুরোধ জানিয়েছেন।

এদিকে মোঃ রুবেল মিয়া নামে স্থানীয় এক ব্যবসায়ী জানান, স্থানীয় ব্যবসায়ীদের কাছে ঘাটটির গুরত্ব রয়েছে। ধান চাল সহ বিভিন্ন খাদ্য সামগ্রী নদীপথে আমদানী করা হলে নদীর তীর পণ্য রাখার জায়গা পাওয়া যায়না। এছাড়া পরিবহনের মাধ্যমে এলাকাবাসীর কর্ম সংস্থানের সুযোগ সৃস্টি হয়েছে। তিনি জানান, ঘাটটি অপসারণ করা হলে স্থানীয় ব্যবসায়ীরা বিপাকে পড়বেন।

ইজারাদার মোঃ শাহজাহান সিরাজ জানান, “জনস্বার্থে ইজারা বিধি মেনেই ঘাটটি নির্মান করা হয়েছে। তিনি বলেন,ঘাটটি নির্মানের পর থেকে ভৈরব আশুগঞ্জ নৌ-বন্দরের বিআইডব্লিওটিএ কর্মকর্তা মোঃ মহিউদ্দিন তার কাছে ১০লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে আসছেন। তিনি বলেন, সরকার পরিবর্তন হয়েছে, এখনো পূর্বের অবস্থা কোথাও কোথাও রয়ে গেছে। এতো টাকা আমরা কোথা থেকে কেন দেবো। চাঁদা না পেয়ে তিনি এসব করছেন। শাহজাহান সিরাজ আরো বলেন, সরকার না চাইলে আমি ঘাটটি সরিয়ে নেব। সেই সাথে আমি ক্ষতিপূরণ দাবি করবো। কারণ অর্থের বিনিময়ে আমি ঘাটটি ইজারা নিয়েছি। অন্যথায় আমি আইনের আশ্রয় নেবো।

এদিকে মেঘনার তীর এবং প্লাবন ভূমি দখল একাধিক স্থানে ঘাট নির্মান করায়, “বিআইডব্লিওটিএর ইজারাবিধি নিয়ে প্রশ্ন তোলেন নদী ও প্রকৃতি সুরক্ষা সামাজিক আন্দোলন “তরী” বাংলাদেশের আহবায়ক মোঃ শামীম আহমেদ। তিনি জানান, বিআইডব্লিওটিএ কর্মকর্তাদের রহস্যজনক ভূমিকার কারণে নদীর তীর দখল হচ্ছে। নদীর প্লাবন ভূমি দখল হচ্ছে। তারা বিষয় গুলো জেনেও অনেকটা নিরব। এ বিষয় নিয়ে তিনি জেলা নদী রক্ষা কমিটির বৈঠকে উত্থাপন করবেন। পাশাপাশি নদী রক্ষা কমিশনের চেয়ারম্যান বরাবর লিখিত অভিযোগ দেবেন।

অপরদিকে আশুগঞ্জ-ভৈরব নদী বন্দর এর উপ-পরিচালক, (বন্দর ও পরিবহন কর্মকর্তা) মোঃ মহিউদ্দিন খাঁন জানান,“নদীর তীর আমরা ইজারা দিয়েছি। ঘাট তৈরীর অনুমোদন দেয়া হয়নি। ইজারার শর্ত ভঙ্গকরায় ঘাটটি অপসারন করার জন্যে জেলা প্রশাসক, আশুগঞ্জ থানা এবং ইজারাদার সহ সংশ্লিষ্টদের চিঠি দেয়া হয়েছে।

এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ দিদারুল আলম জানান,“দ্রæত ঘাটটি অবৈধ স্থাপনা হিসেবে চিহ্নিত করে উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করার জন্যে উপজেলা প্রশাসনকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

Advertisement

Sorry, no post hare.

Social Media Auto Publish Powered By : XYZScripts.com