নিউজ ডেস্ক,
মজলুম জননেতা মওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানীর ৪৮ তম মৃত্যুবার্ষিকীর আলোচনা সভায় বক্তারা বলেন, ১৯৫৭ সালে কাগমারী সম্মেলনে ‘আসসালামু ওয়াইকুম’ বলার মধ্য দিয়ে ভাসানীই প্রথম স্বাধীন বাংলাদেশের কথা বলেছিলেন। কিন্তু বাংলাদেশের স্বাধীনতার ইতিহাসে মওলানা ভাসানী যথাযথভাবে মূল্যায়িত হয়নি। বক্তারা বলেন,মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে ভারতে রাষ্ট্রীয় অতিথির অন্তরালে অন্তরীণ থাকায় তিনি তার ইচ্ছানুযায়ী মুক্তিযুদ্ধে অবদান রাখতে পারেননি। সেজন্য তার মধ্যে আজীবনই দুঃখবোধ কাজ করেছে।
যুদ্ধ চলাকালীন সময়ে তার রাজনৈতিক প্রজ্ঞায় ভাসানী ঠিকই বুঝেছিলেন যে, এ যুদ্ধের মধ্য দিয়ে দেশ স্বাধীন হবে ঠিকই কিন্তু মানুষের মুক্তি আসবে না । স্বাধীনতার ৫৩ বছরেও এ দেশের মানুষের মুক্তি আসেনি দেশীয় এবং সাম্রাজ্যবাদী শোষণ থেকে। ৭১ এর মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় শোষণমুক্ত বৈষম্যহীন সমাজতান্ত্রিক সমাজ বিনির্মাণের লক্ষ্যে মওলানা ভাসানী আজও বাংলাদেশের রাজনীতিতে প্রাসঙ্গিক। রোববার বিকেলে ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেসক্লাব মিলনায়তনে ভাসানী চর্চা কেন্দ্র, ব্রাহ্মণবাড়িয়া আয়োজিত মওলানা ভাসানীর মৃত্যুবার্ষিকীর আলোচনা সভায় বক্তারা এসব কথা বলেন।
ভাসানী চর্চা কেন্দ্র, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সংগঠক অ্যাডভোকেট আবদুন নূরের সভাপতিত্বে এ আলোচনা সভায় মূখ্য আলোচক হিসেবে বক্তব্য রাখেন জেলা কমিউনিষ্ট পার্টির সভাপতি অ্যাডভোকেট সৈয়দ মোঃ জামাল।
ভাসানী চর্চা কেন্দ্রের সংগঠক অ্যাড. মোঃ নাসিরের সঞ্চালনায় অন্যান্যের মধ্যে আলোচনায় অংশ নেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারি কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ প্রফেসর অমৃত লাল দে, জেলা সিপিবির সাধারণ সম্পাদক সাজিদুল ইসলাম, জেএসডির সাধারণ সম্পাদক অ্যাড. তৈমুর রেজা মোঃ শাহাজাদ, জেলা উদীচীর সভাপতি জহিরুল ইসলাম চৌধুরী স্বপন, জেলা এনডিএফ নেতা ইয়াকুব আলী, জেলা বিপ্লবী কমিউিনিষ্ট লীগ নেতা পবিত্র দাস, জেলা ছাত্রমৈত্রীর সভাপতি ফাহিম মুনতাসির প্রমুখ।
বক্তারা বলেন, ভাসানী আজীবন লড়াই সংগ্রাম করে গেছেন নিপীড়িত নির্যাতিত মানুষের মুক্তির জন্য। এ লড়াই এখনো চলছে। এ লড়াইকে যৌক্তিক পরিণতির দিকে নিয়ে যেতে হলে অবশ্যই ভাসানী অনুসারীসহ বাম প্রগতিশীল শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে লড়াই সংগ্রাম সংগঠিত করতে হবে। এর কোন বিকল্প নাই।
সভায় সাম্প্রতিক ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থান প্রসঙ্গে বক্তারা আরও বলেন, মানুষ যে আকাঙ্খা নিয়ে গণঅভ্যুত্থানে অংশগ্রহণ করেছিলেন অন্তবর্তী সরকারের কর্মকান্ডে তেমন আশার আলো দেখতে পাচ্ছেন না। তাই গণঅভ্যুত্থানের মূল চেতনা থেকে বিচ্যুত হলে দেশ আরও ভয়াবহ সংকটের দিকে ধাবিত হওয়ার শঙ্কা প্রকাশ কওে এ মুহুর্তে দেশপ্রেমিক বামপ্রগতিশীল শক্তিকে সতর্কদৃষ্টিতে ঐক্যবদ্ধভাবে সমাজ পরিবর্তনের আন্দোলনে আত্মনিয়োগের জন্য অভিমত ব্যক্ত করেন।