নিউজ ডেস্ক,
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় মোবাইলে প্রেমের ফাঁদ ফেলে আনিসুর হক নামে এক ব্যবসায়ীকে অপহরণের অভিযোগে দুই নারীসহ ৯ জনকে আটক করেছে পুলিশ। রবিবার (৭ এপ্রিল) রাত সাড়ে ৯টার দিকে জেলা শহরের কাউতলী এলাকা থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়। এ সময় আনিসুল হক নামে এক ব্যবসায়ীকে উদ্ধার করা হয়।
আটককৃতরা হলেনঃ পৌরশহরের কান্দিপাড়ার দুলাল মিয়ার ছেলে শাকিল ওরফে লায়ন শাকিল, তার স্ত্রী হাবিবা আক্তার, পৌরশহরের শিমরাইলকান্দি এলাকার জহিরুল হকের ছেলে এনামুল হক ওরফে জুয়েল, একই এলাকার বাচ্ছু মিয়ার ছেলে জোনায়েদ, রেনু মিয়ার ছেলে সাইমন ইসলাম ওরফে রাজু সিকদার, কসবা উপজেলার সাহাপুর এলাকার পান্নার স্ত্রী জোনাকি ওরফে শিউলী, সদর উপজেলার কোড্ডা এলাকার দেলোয়ার খলিফার ছেলে সৌরভ, কলেজপাড়া এলাকার মকবুল হোসেনের ছেলে বাবুল মিয়া ও বিরাসার এলাকার শামছু মিয়ার ছেলে পান্না চৌধুরী।
জানা যায়, জেলার সরাইল উপজেলার চুন্টা ইউনিয়নের রসুলপুর গ্রামের ব্যবসায়ী আনিসুল হকের সাথে মোবাইলে হাবিবা বেগমের কথাবার্তা হতো। একপর্যায়ে হাবিবা বেগমের সাথে ব্যবসায়ী আনিসুল হক রবিবার সন্ধ্যার দিকে জেলা শহরের পাইকপাড়া (পানির ট্যাংক) সামনে দেখা করতে যান। সেখানে আগে থেকে মাইক্রোবাসে ওঁৎ পেতে থাকা ৮-৯ জন দুষ্কৃতিকারী আনিসুলকে জোর করে মাইক্রোবাসে তুলে জেলাশহরের কাউতলী এলাকার আলম ভবনের চতুর্থ তলায় নিয়ে যান। সেখানে তাকে আটকে রেখে মারধর করেন। একপর্যায়ে ওই ব্যবসায়ীর কাছে ১০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করেন। টাকা না দিলে গুম করে হত্যার হুমকি দেওয়া হয়।
শাকিলের স্ত্রী হাবিবা বেগম ব্যবসায়ী আনিসুল হককে টাকা না দিলে ধর্ষণ মামলা দেবে বলেও হুমকি দেয়। ভয়ে ওই ব্যবসায়ী তার স্ত্রী ও মামাকে মুক্তিপণের টাকার বিষয়ে বললে তারা টাকা সংগ্রহ করছে বলে অপহরণকারী দলকে জানায়। ওই সময় তারা ওই ব্যবসায়ীর কাছে থাকা নগদ ১৫ হাজার ৫০০ টাকা নেয়। খবর পেয়ে পুলিশ রাত সাড়ে ৯ টার দিকে জেলা শহরের কাউতলী এলাকার আলম ভবনের চতুর্থ তলা থেকে ব্যবসায়ী আনিসুল হককে উদ্ধার করে ও অপহরণ চক্রের ৯ সদস্যকে গ্রেফতার করে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ আসলাম হোসেন জানান, রাতে জেলা শহরের কাউতলী এলাকার আলম ভবনের চতুর্থ তলা থেকে ব্যবসায়ী আনিসুল হককে উদ্ধার করা হয়। এ সময় সংঘবদ্ধ অপহরণ চক্রের ৯ সদস্যকে গ্রেফতার করে। গ্রেফতার শাকিল কুখ্যাত অপহরণকারী, ম্যাজিস্ট্রেটের গাড়ি ভাঙচুরসহ একাধিক মামলার পরোয়ানাভুক্ত পলাতক আসামি। অপহরণ চক্রের মূলহোতা হচ্ছে শাকিল।
তিনি আরো জানান, এ চক্রে দুইজন নারী সদস্য রয়েছে, তাদের কাজ হচ্ছে বিভিন্ন জনের সাথে মোবাইলে সখ্য গড়ে তোলা। একপর্যায়ে দেখা করতে এলে অপহরণ করে নিয়ে মুক্তিপণ আদায় করত। চক্রটি ছিনতাই, চুরি ও ডাকাতির সাথেও জড়িত। গ্রেফতার ৯ জনের বিরুদ্ধে থাকায় একাধিক মামলা রয়েছে। এ ঘটনায় মামলা প্রক্রিয়াধীন।