নিউজ ডেস্ক,
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় সম্পত্তির লোভে বৃদ্ধ বাবা-মাকে নির্যাতনের দায়ে মেঝো ছেলে জহিরুল ইসলামের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে আদালত।ঘটনাটি ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌরসভার মধ্যপাড়া বাসস্ট্যান্ডের পশ্চিম পাড়া এলাকায় ঘটে।
মামলার অভিযোগ থেকে জানা গেছে, বাদী তাজুল ইসলামের চার ছেলে ও তিন মেয়ে রয়েছে। আসামী জহিরুল ইসলামসহ ৪ ভাইয়েরা মিলে ৫ তলা বিল্ডিং নির্মাণ করেন এবং নিচতলার দক্ষিন পাশে একটি গ্যারেজও ভাড়া দেন। কিন্তু আসামী জহিরুল ইসলাম দীর্ঘদিন যাবত তার ভাই-বোনদের জায়গা জমি ও বাড়িঘর দখল করার চেষ্টা করেন। জহিরুল ইসলাম ২/৩ মাস পূর্বে গ্রামের ঘরবাড়ি ও শহরের ৫ তলা বিল্ডিং দখল করতে গেলে তাকে বাবা তাজুল ইসলাম বাধা দিলে জহিরুল তার উপর আক্রমণ করেন। জহিরুল ইসলাম বাড়ি ও জায়গা সম্পত্তি বেআইনীভাবে দখলে নেওয়ার জন্য চেষ্টা করে।
জহিরুল তার বাবা তাজুল ইসলামের কাছে এসে বাড়িঘর ও জায়গা সম্পত্তি মালিকানা হস্তান্তর করার জন্য চাপ প্রয়োগ করেন। তা অস্বীকার করায় বাবা তাজুল ইসলাম ও মা হেনেরা বেগমকে আঘাত করেন জহিরুল। এ বিষয়ে প্রতিবাদ করায় বাদির বড় ছেলে নজরুল ইসলামকে পিটিয়ে রক্তাক্ত করেন জহিরুল। এ ঘটনায় আহত নজরুল ইসলাম থানায় অভিযোগও দায়ের করেন।
গত ২০ ফেব্রুয়ারী নির্যাতনের শিকার বাবা হাজী তাজুল ইসলাম বাদী হয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া বিজ্ঞ সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট সদর আদালতে মামলা করেন। সোমবার (৪ সেপ্টেম্বর) সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট হাসনাত জাহান নিপা অভিযোগটি গ্রহণ করেন এবং গ্রেপ্তারি পরোয়ানার জন্য সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে আদেশ দেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেন মামলার বাদীপক্ষের আইনজীবী কাজী মুস্তাফিজুর রহমান।
এ বিষয়ে মামলার বাদী হাজী তাজুল ইসলাম বলেন, আমার মেজো ছেলে জহিরুল ইসলাম জায়গা সম্পত্তি ও বাড়ির একক মালিকানার জন্য আমাকে ও বড় ছেলেকে একাধিকবার পিটিয়েছে। আমার ছেলে হাসপাতালে ভর্তি আছে। জহিরুলের অত্যাচারে আমরা অতিষ্ঠ হয়ে গেছি। আমার কোন ছেলে-মেয়েই নিরাপদে নেই। বিভিন্নভাবে আমাদেরকে হত্যার হুমকি দিচ্ছে। তিনি আইনী সহযোগিতা ও বিচারের দাবী জানান।
আহত নজরুল ইসলাম জানান, গত দুদিন আগে জহিরুল আমাদের বাড়ির সামনে আমাকে কাঠ দিয়ে বাড়ি দিয়ে রক্তাক্ত করেছে৷ বাড়ির ভাড়াটিয়াদেরকে জহিরুল মারতে আসে, তার কারনে বাড়ির ভাড়াটিয়ারাও শান্তিতে নেই। কোনভাবে জহিরুলকে প্রতিহত করা যাচ্ছে না। সে মাদক ব্যবসায়ী। মাদকের টাকার জন্য আমার বাবা-মাকে এর আগেও একাধিকবার মারধর করেছে।
সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো: আসলাম হোসাইন জানান, আদালত থেকে জহিরুলের গ্রেপ্তারের পরোয়ানা পেয়েছি। তাকে গ্রেপ্তারের জন্য পুলিশ কাজ করছে। তাছাড়া জহিরুলের বড়ভাই নজরুল ইসলামকে মারধোরের করার অভিযোগপত্র হাতে পেয়েছি। খুব দ্রুত জহিরুলকে গ্রেপ্তার করবো।