Advertisement

কসবায় এডিপি’র ৫০ লাখ টাকার বিশেষ বরাদ্দ, জনপ্রতিনিধিরা কেউ কিছু জানে না

NewsBrahmanbaria

এই আর্টিকেল টি ১০৩৫।

স্টাফ রিপোর্টার:

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা উপজেলায় প্রায় বার্ষিক উন্নয়ন প্রকল্পের (এডিপি) প্রায় ৫০ লাখ টাকার কাজের ৯০ শতাংশের হদিস নেই। অথচ কাজ শেষ হয়েছে প্রত্যায়ন পেয়ে ঠিকাদাররা বিল উঠিয়ে নিয়েছেন। এ নিয়ে এলাকায় তোলপাড় শুরু হয়েছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এলাকার উন্নয়নের জন্য সংশ্লিষ্ট এডিবি’র বিশেষ বরাদ্দের ৫০ লাখ টাকা আসে। উন্নয়নের জন্য কিছু প্রকল্প তৈরি করেন সংশ্লিষ্টরা। এর মধ্যে রয়েছে রাস্তা, রিটার্নিং ওয়াল, ঘাটলা, কালভার্ট নির্মাণ, সড়ক সংস্কার, সেতুর সৌন্দর্য্যবর্ধন, নলকূপ স্থাপন, মাদ্রাসার উন্নয়ন ইত্যাদি। পৌর এলাকাসহ উপজেলার চারগাছ, বাদৈর, শ্যামবাড়ি নোয়গাঁও, মূলগ্রাম, নয়নপুর, চকচন্দ্রপুর, আকছিনা, রাইতলা এলাকায় এসব উন্নয়ন হওয়ার কথা।

তাজ এন্টারপ্রাইজ, মীম এন্টারপ্রাইজ, মোবাইল ফেয়ার, হাবিব এন্টারপ্রাইজ, প্রাপ্তি ট্রেডার্স, ওমরাহ খান ইন্টারন্যাশনাল, হাসান এন্ড হুসাইন এন্টারপ্রাইজ, শাহা ট্রেডার্স, মেসার্স ঈশা ইলেকট্রনিক্স, মায়ের দোয়া এন্টারপ্রাইজ, শুকরিয়া এন্টারপ্রাইজ, বুশরা ট্রেডার্সকে এসব কাজ দেয়া হয়।এর মধ্যে হাসাই এন্ড হুসাইন নামে নবীনগরের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান বাদে বাকিগুলো সব কসবার। ইতিমধ্যেই সংশ্লিষ্ট ঠিকাদাররা কাজের বিল উঠিয়ে নিয়ে গেছেন।

তবে  জানা গেছে, এসব কাজের ৯০ শতাংশও এখনও হয় নি। শুধু মাত্র পৌর এলাকার একটি সেতুর সৌন্দর্য্য বর্ধন কাজ করা হচ্ছে। বাকিগুলোর কোনো হদিস নেই। এলাকার লোকজন এসব কাজের বিষয়ে অবগত নন।

সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র জানিয়েছে, এসব কাজের বেলায় কোনো ধরণের নিয়ম মানা হয় নি। উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট রাশেদুল কাওসার জীবনসহ সংশ্লিষ্টরা নিজেদের পছন্দমতো ঠিকাদারকে এসব কাজ দিয়েছেন। এ ক্ষেত্রে কোনো ধরণের দরপত্রও আহবান করা হয় নি কিংবা কোনো ধরণের প্রচারণা চালানো হয় নি। শেষ পর্যন্ত কাজ না করিয়েই ঠিকাদারকে বিল দিয়ে দেওয়া হয়।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একটি সূত্র জানায়, ওই বরাদ্দের প্রকল্প তৈরিসহ কোনো ধরণের বিষয়েই সংশ্লিষ্ট অনেকের সঙ্গে কথা বলা হয় নি। পছন্দের ঠিকাদারদেরকে কাজ দেয়া হয়েছে। এমনকি কাজ করা করেই বিল দিয়ে দেয়া হয়েছে। এখন ঠিকাদাররা কাজ না করলেও তাদেরকে কাগজে কলমে কিছু করার সুযোগ থাকবে না। আর নিজেদেরকে রক্ষা করতে তখন সংশ্লিষ্টরাও কিছু বলবেন না।
উপজেলার বাদৈর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ইকবাল হোসেন প্রথমে এডিবি’র কোনো বরাদ্দ পাননি জানালেও পরে কথা বলবেন বলে ফোন কেটে দেন।

উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান মনির হোসেনকে দফায় দফায় ফোন দিলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।

উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান ফারহানা সিদ্দিক বলেন- আমি অসুস্থ, এ বিষয়ে কিছুই জানি না। এছাড়া কেউ আমাকে এ বিষয়ে কিছু জানায় নি।

তবে কসবা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মাসুদ উল আলম বলেন, ‘জুন মাসের ৯ তারিখ এ বরাদ্দ আসে। ২৫ জুনের মধ্যে কাজের বিল সাবমিট না করলে টাকা ফেরত যেতো। যে কারণে টেন্ডার প্রক্রিয়ায় না গিয়ে সরকারি বিধি মেনে বিকল্পভাবে কাজ দেয়া হয়। টাকা চলে গেলে এলাকারই ক্ষতি হবে- এমন চিন্তা থেকে ঠিকাদারকে বিল দিয়ে দেয়া হয়।

কিন্তু তাদের কাছ থেকে সমপরিমাণ টাকার পে-অর্ডার রেখে দেয়া হয়েছে। যে কারণে কাজ না করার সুযোগ নেই। যাদেরকে কাজ দেয়া হয়েছে তারা এর চেয়ে বেশি টাকার কাজ করেন। যে কারণে কাজ না করে টাকা আত্মসাত করবেন সেটাও মনে করি না। আর কাজ না করে টাকা আত্মসাত করে পার পাওয়ারও কোনো ধরণের সুযোগ নেই। উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এটি বেশ ভালোভাবেই তদারকি করছেন।’

কসবা উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান রাশেদুল কায়সার ভূইয়া জীবন ঠিকাদারদের বিল দেয়ার কথা অস্বীকার করে বলেন- ‘আমি কাজ না দেখে কোনো বিল পরিশোধ করব না’।

Advertisement

Sorry, no post hare.

Social Media Auto Publish Powered By : XYZScripts.com